পৃষ্ঠাসমূহ

প্রকৃতি ও মানবপ্রকৃতি

এতটা ভীতি কিংবা আতঙ্ক নিয়ে চলে না জীবন; নদী পাহাড় বৃক্ষ সমুদ্র বন প্রকৃতির মূলধন। সব জলাভূমি সবার; দখলবাজ কিংবা দূষণকারীর নয়। পাহাড়চূড়ার সৌন্দর্য আর বিশুদ্ধ বাতাসের অধিকার সবার; উন্নয়নের নামে বনভূমি হত্যা কিংবা বৃক্ষকর্তন নয়; প্রকৃতির বিরুদ্ধে যাওয়ার পরিকল্পিত আয়োজনে মানুষের যত ভয়। ফুলের সৌরভ নিতে বাগানে এসো; বিশুদ্ধ বাতাস নিতে নদী কিংবা সমুদ্রতীরে চলো; প্রকৃতির শান্ত সবুজ সৌন্দর্য দেখতে আর নিবিড় মিতালি গড়তে এসো বনভূমির কাছে একান্তে। মানুষেরা প্রকৃতির অংশবিশেষ; প্রকৃতি করো না নিঃশেষ। প্রকৃতিময় বন্ধুত্বের জীবন মানুষের প্রয়োজন; মানবপ্রকৃতি প্রকৃতির বাইরে নয়; প্রকৃতিদ্রোহীর জয় ভয়াবহ হয়। প্রকৃতি-পরিবেশ ধ্বংস নয়, মানবিক পরিবেশেই মানুষের জয়। 
রমনা পার্ক, ঢাকা; ০৮ জুন, ২০১৪

দ্বিমেরু অবস্থান

একবার ঘৃণার তুফান এলে ভালোবাসা আর হয় না সহজে; মানুষ মাত্রই ঘৃণা আর ভালোবাসার দ্বিমেরু সহাবস্থানে। কাকে ভালোবাসা যায় আর কাকে নয় তা সবার ব্যক্তিগত; মানুষ হয়ে মানুষের বিরুদ্ধে, শান্তির বিরুদ্ধে যাওয়া প্রিয়জন হয়ে প্রিয়জনের বিরুদ্ধে যাওয়া এ বড় দুঃসহ। মানুষ ভালোবাসার ঊর্ধ্বে কিংবা ঘৃণার অতলে নয়; মানুষ মানে একটি সচল অবয়ব কিংবা ধরাবাঁধা কিছু নয়; মানুষ মুখস্থ সত্তা নয়, বেশ গভীরতাময়। মনের এপার হতে ওপারে মানুষের যাওয়া-আসা; শূন্যতায় ফুল ফোটানোর যাদুকরী ক্ষমতা তার। তবু কেন আত্মবিনাশী আয়োজনে সযতœ পরিচর্যা তার; স্বার্থের বলি হয়ে নিজেকে নিঃশেষ করার প্রবণতা বোঝা ভার। মানুষ না থাকে নিজের ভেতরে, না থাকে তার বাইরে; তার আছে সর্ববিস্তারী ক্ষমতা, বিকাশের সৃষ্টিময়তা। প্রাণপ্রাচুর্য নিয়ে সে যখন সচেষ্ট ও উচ্চকিত থাকে অবিরত দেবত্ব অর্জিত হয় তার, আর পশুত্ব মানে বশ; নিজেকে ক্ষত-বিক্ষত করার প্রয়াস তবু কেন কমে না বিশ্বে মৃত্যুঞ্জয়ী সত্তা নিয়ে কেন তবু জর্জরিত ভয়াবহ তীব্র বিষে! দৈনিক ইত্তেফাক ভবন, ঢাকা; ১১ জুন, ২০১৪

জীবনের পরিসর

নিজে দেখতে পারো কিংবা অন্যকে দেখাতে পারো ফুল, পাখি, নদী ও নারী অথবা প্রকৃতির বিস্ময়; জীবনের প্রতি ভালোবাসা হতে প্রকৃতিপ্রেম সবই। দেখার কিংবা দেখানোর ক্ষমতা নিয়েও যারা অন্ধ থাকে, সচেতনভাবে উপেক্ষা করে নিজেকে তারা কি আত্মান্ধ? তারা কি জীবনপ্রেমী না প্রকৃতিপ্রেমিক! যে যাই বলে বলুক, আত্মচেতনার স্পর্শময় অনুভূতি উপেক্ষা করো না জীবনের উর্বর ভূমিতে থেকে নিজেকে নিষ্ফলা রেখো না, ভূমিকাহীন থেকো না জীবনের বহুত্বময় মাঠে চাষ করো সুন্দর, প্রেম, স্বপ্ন, আশা ও অন্বেষা। তাৎপর্যের পরিসরে আদিগন্ত ছুটে যেতে হবে নতুন নির্মাণে; বহুফসলা জীবন সক্রিয় চাষির হাতে থাকে সবুজ ও সতেজ; দুর্ভার পাথরবাহীরা মরুময় জীবনের ক্লান্ত পথিক, তারা বিশ্রামের অপেক্ষায়। জীবনের রহস্যময় জ্যামিতি এঁকে নিজেকে প্রকাশ করেন জীবনশিল্পী; এ মহা সামর্থ্যরে অর্জন প্রচেষ্টার অধীন। জীবনের শূন্য পরিসর পূর্ণ করা, অর্থহীনতাকে তাৎপর্যময় করা জীবনশিল্পীর কাজ। সবাই শিল্পী নয়; শিল্পের উপকরণ থাকে সবার সত্তায়। প্রীতিময় জীবনের প্রতি পর্ব তাৎপর্যময়; সানন্দে পথ চলেন জীবনবাদী নিত্যজয়ের নেশায়। শিল্পকলা একাডেমি, ঢাকা; ১০ জুন, ২০১৪

গণদুষমন

দানব হলে মানবশাসক দূর হবে না দুঃশাসন বাড়বে শোষণ-নির্যাতন; বিপন্ন হবে মানুষের মর্যাদার আসন। রাজনীতি নগদনীতি, মানুষ মেরে সহিংসতায় প্রীতি; অরাজক পরিস্থিতি হত্যা খুন আর গুমে মানুষের যত ভীতি। গণদুষমনদের আশ্বাসে বিশ্বাস নেই, ভরসা নেই অঙ্গীকারে; তারা কখনো ভাষণে ভীষণ, কখনো গ্রেফতার হয়ে কারাগারে। কিছু বামের আছে দুর্নাম; বিএনপি ওরফে জামায়াতের নেই সুনাম; দল বদলকারী সন্ত্রাসী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেরও বদনাম।
হাতিরপুল বাজার, ঢাকা; ১১ জুন, ২০১৪

স্বার্থপর

তুমি ছিলে প্রিয়জন শুভাকাক্সক্ষী বন্ধু অনেকের প্রিয় কথা শোনাতে, অপ্রিয় কাজ এড়াতে। অন্যের পছন্দ আর আগ্রহের বিষয় জানতে; ভালোবেসে অন্যের শূন্যতা পূরণ করতে। এখন নিজে ভালো থাকতে চাও; ভালো খেতে-পরতে চাও; ভালো করতে চাও না অন্যের; ভালো হতে চাও না নিজে। অন্যকে বঞ্চিত করে পেতে চাও নিজের সমৃদ্ধি; অন্যের ক্ষতির বিনিময়েও আত্মস্বার্থ লাভে তৎপর হও। ক্রমাগত কর্মদোষে অপ্রিয় হয়েছ সবার; অথচ ছলচাতুরি ছাড়াই ভালো হতে পারতে, ভালো করতে পারতে অন্যের, এমনকি নিজেরও। নিজের ত্র“টি আড়াল করে অন্যের দোষ খোঁজো নিরন্তর; অন্যের যা অপছন্দ তা কর সানন্দে সারাক্ষণ। পরনিন্দা কর অবিরত; অন্যের অকল্যাণ কর প্রতিনিয়ত নিজের দোষ লালন করে অন্যকে ঢেকে ফেলো বদনামে। ভালো হয়ে থাকতে চাও না সুখে ও সুনামে। নিজেকে অন্যের মধ্যে, অন্যকে নিজের মধ্যে দেখতে চাও না; কারো দুঃখে-শোকে, দুঃসময়ে সহায়ক হতে পারো না। অন্যের অনুগ্রহ পেয়েও অন্যকে জ্বালাও নিয়মিত; চাইলে নিজে ভালো থেকে অন্যেরও ভালো করতে পারো ক্রমাগত। শিক্ষকপল্লি, মোহাম্মদপুর, ঢাকা; ১২ জুন, ২০১৪

প্রকৃতিদ্রোহ

রতনতনু ঘোষ

প্রকৃতির কাছে এলাম সহসা জরুরি আকর্ষণে;
চেনা নদী অচেনা হলো বহু বছর পর,
শহরজুড়ে বাড়ি গাড়ি তার উপর।
তাকিয়ে দেখি নদীটি নেই; আছে নদীর লাশ।
প্রশস্ত নদী চিলতে ছিলো; শীর্ণ নদী মরে গেলো।

---জীবনের পরিসর---

রতনতনু ঘোষ


নিজে দেখতে পারো কিংবা অন্যকে দেখাতে পারো ফুল, পাখি, নদী ও নারী
অথবা প্রকৃতির বিস্ময়; জীবনের প্রতি ভালোবাসা হতে প্রকৃতিপ্রেম সবই।
দেখার কিংবা দেখানোর ক্ষমতা নিয়েও যারা অন্ধ থাকে, সচেতনভাবে উপেক্ষা করে নিজেকে
তারা কি আত্মান্ধ? তারা কি জীবনপ্রেমী না প্রকৃতিপ্রেমিক!
যে যাই বলে বলুক, আত্মচেতনার স্পর্শময় অনুভূতি উপেক্ষা করো না
জীবনের উর্বর ভূমিতে থেকে নিজেকে নিষ্ফলা রেখো না, ভূমিকাহীন থেকো না

দ্বিমেরু অবস্থান

রতনতনু ঘোষ

একবার ঘৃণার তুফান এলে ভালোবাসা আর হয় না সহজে;
মানুষ মাত্রই ঘৃণা আর ভালোবাসার দ্বিমেরু সহাবস্থানে।
কাকে ভালোবাসা যায় আর কাকে নয় তা সবার ব্যক্তিগত;
মানুষ হয়ে মানুষের বিরুদ্ধে, শান্তির বিরুদ্ধে যাওয়া
প্রিয়জন হয়ে প্রিয়জনের বিরুদ্ধে যাওয়া এ বড় দুঃসহ।

গণদুষমন

রতনতনু ঘোষ

"গণদুষমন"

দানব হলে মানবশাসক দূর হবে না দুঃশাসন
বাড়বে শোষণ-নির্যাতন; বিপন্ন হবে মানুষের মর্যাদার আসন।
রাজনীতি নগদনীতি, মানুষ মেরে সহিংসতায় প্রীতি;
অরাজক পরিস্থিতি হত্যা খুন আর গুমে মানুষের যত ভীতি।
গণদুষমনদের আশ্বাসে বিশ্বাস নেই, ভরসা নেই অঙ্গীকারে;
তারা কখনো ভাষণে ভীষণ, কখনো গ্রেফতার হয়ে কারাগারে।
কিছু বামের আছে দুর্নাম; বিএনপি ওরফে জামায়াতের নেই সুনাম;
দল বদলকারী সন্ত্রাসী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেরও বদনাম।

হাতিরপুল বাজার, ঢাকা; ১১ জুন, ২০১৪

স্বার্থপর


তুমি ছিলে প্রিয়জন শুভাকাক্সক্ষী বন্ধু অনেকের
প্রিয় কথা শোনাতে, অপ্রিয় কাজ এড়াতে।
অন্যের পছন্দ আর আগ্রহের বিষয় জানতে;
ভালোবেসে অন্যের শূন্যতা পূরণ করতে।

এখন নিজে ভালো থাকতে চাও; ভালো খেতে-পরতে চাও;
ভালো করতে চাও না অন্যের; ভালো হতে চাও না নিজে।
অন্যকে বঞ্চিত করে পেতে চাও নিজের সমৃদ্ধি;
অন্যের ক্ষতির বিনিময়েও আত্মস্বার্থ লাভে তৎপর হও।