দলীয় সরকারের অধীনে এবং স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে বিজয়ী হয়েও তত্ত্বাবধায়ক চায় বিএনপি!
গাজীপুর নির্বাচন কী বার্তা দিয়ে গেল
দৈনিক ইত্তেফাক 08.07.13
রতনতনু ঘোষ
মানুষ যখন নির্ভরযোগ্য
লোকের ওপর
আস্থা হারিয়ে
ফেলে তখন
মুখ ফিরিয়ে
নিতে বাধ্য
হয়। জনগণ
সুযোগ পেলে
তা প্রকাশ
ঘটাতে দ্বিধা
করে না।
জাতীয় জীবনের
বিভিন্ন ইস্যুতে
এখন জনগণ
সরকারের প্রতি
আস্থাহীন ও
ভরসাহীন। গণজাগরণ
মঞ্চের কতিপয়
ব্লগার ধর্ম
নিয়ে ঔদ্বত্য
দেখিয়েছে। অথচ সরকার তাদের সমর্থন
দিয়েই গেছে।
তা সাধারণ
মানুষের মনে
অনেক রেখাপাত
করেছে। পদ্মা
সেতু নিয়ে
বিশ্বব্যাংক ও সরকার যে খেলা
খেলেছে এবং
দুর্নীতিকে জাতীয়ভাবে মোকাবিলার জন্য সর্বাত্মক
উদ্যোগ গড়ে
তোলার গণআকাঙ্ক্ষা
রয়েছে জাতির
নিকট। সেই
গণপ্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায়ও জনগণ
সরকারের প্রতি
ক্ষুব্ধ।
ক্ষমতাসীন মহাজোট আমলে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন নির্বাচনে একের পর এক পরাজয় বরণ করতে হচ্ছে আওয়ামী লীগকে। এ পরাজয়ের কারণ চিহ্নিত ও বিশ্লেষণ করা দরকার সতর্কতার সঙ্গে। সরকারি দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব-বিরোধ চরম পর্যায়ে, নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীর অংশগ্রহণ এবং বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী পক্ষের আস্তিক ও নাস্তিক প্রচারণাও এক্ষেত্রে বেশ কার্যকর হয়েছে। এই ধর্মভিত্তিক প্রচারণারও যথাযথ জবাব দিতে ব্যর্থ হয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সরকার পরিচালনায় নানা ধরনের ব্যর্থতা ও জনপ্রিয়তা হরাস। কেন্দ্র থেকে জেলা এমনকি উপজেলা পর্যন্ত সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগের দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্ব ও বিরোধ। পারস্পরিক অসহযোগিতা ও অসংগঠিত অবস্থা তাদের পরাজয়কে ত্বরান্বিত করেছে। মহাজোট সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে বিগত সাড়ে চার বছরে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচনের ফলাফলই আওয়ামী লীগের বিপক্ষে গিয়েছে। পৌরসভা নির্বাচন হয়েছে মোট ২৩৯টির। এর মধ্যে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন ৯১ জন, আর বিএনপি প্রার্থী জিতেছেন ৯৬ জন। সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয়েছে ৮টিতে। এর সবকটিতে পরাজিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীগণ। এরমধ্যে ৬টি বিএনপি এবং ২টি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। এমপির মৃত্যুর কারণে কয়েকটি উপ-নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে দুইটিতে অংশ নিয়েছে বিএনপি। এই দুইটির মধ্যে একটি আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী পরাজিত হয়েছে। অন্য উপ-নির্বাচনগুলোতে বিএনপি অংশ নেয়নি। আর চার হাজার ২৯৮টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে দুই হাজার ১৯৭টিতেই হেরেছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ৩০০ আসনের মধ্যে ২৬২টিতেই বিজয়ী হয়েছিলো। এর ২৪ দিন পরই অনুষ্ঠিত ৪৭৫টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ একক আধিপত্য বজায় রেখে ৩০৪টিতে জয়ী হয়। এর পর যতই দিন যেতে থাকে, আওয়ামী লীগের পরিণতি পরাজয়ের দিকে ধাবিত হতে থাকে। এ পরাজয়ের বিপক্ষের যুক্তি হিসেবে আওয়ামী লীগ সব সময়ই বলেছে :গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন এবং দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব তা প্রমাণ হয়েছে, জনগণের রায়কে দল মেনে নিয়েছে, এটা স্থানীয় নির্বাচন, জাতীয় নির্বাচন না। এতে জাতীয় রাজনীতির ওপর প্রভাব পড়ে না। আবার দলের দুর্বলতার কারণে নির্বাচনে পরাজয়ের কথা স্বীকার করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথাও তুলছেন কেউ কেউ। প্রবীণ নেতাদের মতে, দলের সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকা নেতারা সংগঠন গোছানো, সংগঠনে ঐক্য প্রতিষ্ঠা, সংগঠনকে শক্তিশালী করতে সঠিক দায়িত্ব পালনে বিগত সাড়ে চার বছরে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছেন।
ক্ষমতাসীন হওয়ার পর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রথম পরাজয়ের সূচনা হয়। ২০১০ সালের ১৭ জুন অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী পরাজিত হন বিএনপি প্রার্থী এম মঞ্জুর আলম মঞ্জুর নিকট। ৯৫ হাজার ৫২৮ ভোটের বিশাল ব্যবধানে মঞ্জুর হারিয়ে দেন তারই রাজনৈতিক গুরু মহিউদ্দিন চৌধুরীকে। চট্টগ্রাম নির্বাচনে দল মহিউদ্দিন চৌধুরীকে সমর্থন দিলেও তার পক্ষে মাঠে নামেননি স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাগণ। আওয়ামী লীগের পরাজয় আরো দৃশ্যমান হয়ে উঠে ২০১১ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনসমূহে। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা ও জনপ্রিয়তা নিয়ে সরকার গঠন করেও আওয়ামী লীগ দুই বছরের মাথায় নির্বাচনের রাজনীতিতে এসে হোঁচট খেয়েছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে পিছিয়ে পড়ে জাতীয় নির্বাচনেও ভরাডুবি হয় বিএনপির কাছে। পৌরসভা নির্বাচনগুলোতে আওয়ামী লীগের ২১ জন বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। সে সময়ে দলের অভিজ্ঞ নেতাদের বিশ্লেষণে চিহ্নিত হয়েছিল পরাজয়ের নানা কারণ। বিশেষত দলে ভুল প্রার্থী মনোনয়ন দান, দলীয় কোন্দল এবং বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের অদক্ষতা ও সরকারের জনপ্রিয়তা ঘাটতির কারণে পৌরসভা নির্বাচনে প্রত্যাশিত ফল লাভ করেনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। পৌরসভার রেশ না কাটতেই শাসক দল আবারও পরাজিত হয় হবিগঞ্জ-১ উপ-নির্বাচনে। দলের প্রবীণ নেতা দেওয়ান ফরিদ গাজীর মৃত্যুর পর শূন্য হওয়া সংসদীয় আসনটিতে জয় ধরে রাখতে ব্যর্থ হয় আওয়ামী লীগ। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জয় হয়েছিল। তারপর নবগঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আবারও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলের প্রার্থী পদ নিয়ে দেখা দেয় বিরোধ। এ নির্বাচনে দল সমর্থিত প্রার্থী শামীম ওসমান লক্ষাধিক ভোটে পরাজিত হন বিদ্রোহী প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াত্ আইভীর নিকট। ২০১১ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নবগঠিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আবারও পরাজিত হন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী। দলের দুই বিদ্রোহী প্রার্থীকে নির্বাচনের মাঠ থেকে নিষ্ক্রিয় করার উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে নির্বাচনে বিএনপি থেকে অব্যাহতি পাওয়া সম্মিলিত নাগরিক কমিটির নেতা মনিরুল হক সাক্কু সহজ জয় পান। এছাড়া গত ২০১১ সালের ৩১ মে থেকে শুরু হয়ে ৫ জুলাই পর্যন্ত অনুষ্ঠিত দেশব্যাপী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলে বিএনপি। ইউপি নির্বাচনে প্রায় প্রত্যেক জায়গায় ছিল আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী। মোট ৪২৯৮টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ২১০১, বিএনপি সমর্থিত ১৬১৮, জাতীয় পার্টি সমর্থিত ৮৪ জন প্রার্থী জয় লাভ করে। এ নির্বাচনে দল হিসেবে আওয়ামী লীগ এগিয়ে থাকলেও তাদের ভোট ব্যাংকে আঘাত করে বিরোধী দল বিএনপি। চলতি বছর অনুষ্ঠিত রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জয় লাভ করে। এবছর ১৫ জুন খুলনা, রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিটিতেই আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা পরাজিত হয়। এ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরাজয়ের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তার ধস দলের ভেতরে ব্যাপক আলোচনার ঝড় তোলে।
এবার গাজীপুর সিটি নির্বাচন গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন ও বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া। ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার পর থেকে গুলশানের বাসভবনে বসেই নির্বাচন সংক্রান্ত খোঁজ নেন বেগম জিয়া। তিনি গণমাধ্যম, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের মাধ্যমে গাজীপুর সিটি নির্বাচনের খবরা-খবর রাখেন। এছাড়া গুলশান অফিসের কর্মকর্তাগণ বেগম জিয়াকে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পাঠিয়েছেন। কোনো নির্দেশনা থাকলে সাথে সাথে নেতাদের তা জানিয়ে দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন। এছাড়া ভোটগ্রহণ শেষে বাসায় টেলিভিশনের সহায়তায় ভোটের ধারাবাহিক ফলাফল প্রত্যক্ষ করেন তিনি। গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে চিকিত্সাধীন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও স্থায়ী কমিটির সদস্য তারেক রহমানেরও আগ্রহের কমতি ছিল না। তিনি তার বিশ্বস্ত নেতাদের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নিয়েছেন নয়াপল্টন বিএনপি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিএনপির হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাচন চলাকালে নানা শঙ্কা থেকে গাজীপুর সীমানা ঘেঁষে থাকা জেলা নেতারা দিনভর অবস্থান নিয়েছিলেন। বিশেষ করে ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজধানীর উত্তরা এবং ঢাকা জেলার নেতারা সাভার এলাকায় অবস্থান নিয়েছিলেন। এছাড়া ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল সতর্ক অবস্থায় প্রস্তুত ছিল। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যান, ১৮ দলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষনেতা ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির যুগ্ম মহাসচিবসহ সারাদিন ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা সতর্ক অবস্থায় ছিলেন গাজীপুরের আশপাশে। ফল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত তাদের যার যে দায়িত্ব তা পালন করেছেন। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার এক ঘন্টা আগে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক সংবাদ সম্মেলনে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, "ফল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত কেউই ভোট কেন্দ্র ছেড়ে যাবেন না।"
স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে জাতীয় পর্যায়ে নেতৃবৃন্দের তদারকি এবং নির্দলীয় প্রার্থীদের উপর দলীয় প্রচারণা ও চ্যালেঞ্জকে জাতীয় নির্বাচনমুখী উদ্যোগ বলে বিশ্লেষণ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। নির্বাচনের ফলাফলের পর বেগম খালেদা জিয়া দলীয় নেতা ও কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, উত্ফুল্ল না হয়ে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নেন। তবে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠক করে বলেছেন : গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও উন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও দলীয় সরকারের অধীনে সংবিধানসম্মত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে গণতন্ত্রের প্রতি তার সুদৃঢ় ও ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশিত হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার রকিবউদ্দিন আহমেদ বলেছেন: নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হয়েছে, ফলাফল মেনে নেয়ার সংস্কৃতি গঠন করুন। তার এ বক্তব্যের মর্মার্থ উপলব্ধি করা উচিত প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোরনেতৃবৃন্দের।
গাজীপুর নির্বাচনের প্রতিক্রিয়ায় যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, "জনগণের কাছে দুর্ভেদ্য দুর্গ বলে কিছু নেই। জনগণ যে-কোন দুর্গই ভেঙে দিতে পারে, যদি তারা আস্থা হারায়।" গাজীপুর নির্বাচন স্থানীয় পর্যায়ের হলেও এ থেকে শিক্ষা নিয়ে সরকারকে জাতীয় পর্যায়ে অগ্রসর হতে হবে। এ নির্বাচন সরকারের জন্য অবশ্যই বার্তাবহ। এ নির্বাচন সরকারকে কী সতর্কবার্তা দিয়ে গেল তা নিয়েও গভীরভাবে ভাবতে হবে সরকারকে।
ক্ষমতাসীন মহাজোট আমলে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন নির্বাচনে একের পর এক পরাজয় বরণ করতে হচ্ছে আওয়ামী লীগকে। এ পরাজয়ের কারণ চিহ্নিত ও বিশ্লেষণ করা দরকার সতর্কতার সঙ্গে। সরকারি দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব-বিরোধ চরম পর্যায়ে, নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীর অংশগ্রহণ এবং বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী পক্ষের আস্তিক ও নাস্তিক প্রচারণাও এক্ষেত্রে বেশ কার্যকর হয়েছে। এই ধর্মভিত্তিক প্রচারণারও যথাযথ জবাব দিতে ব্যর্থ হয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সরকার পরিচালনায় নানা ধরনের ব্যর্থতা ও জনপ্রিয়তা হরাস। কেন্দ্র থেকে জেলা এমনকি উপজেলা পর্যন্ত সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগের দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্ব ও বিরোধ। পারস্পরিক অসহযোগিতা ও অসংগঠিত অবস্থা তাদের পরাজয়কে ত্বরান্বিত করেছে। মহাজোট সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে বিগত সাড়ে চার বছরে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচনের ফলাফলই আওয়ামী লীগের বিপক্ষে গিয়েছে। পৌরসভা নির্বাচন হয়েছে মোট ২৩৯টির। এর মধ্যে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন ৯১ জন, আর বিএনপি প্রার্থী জিতেছেন ৯৬ জন। সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয়েছে ৮টিতে। এর সবকটিতে পরাজিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীগণ। এরমধ্যে ৬টি বিএনপি এবং ২টি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। এমপির মৃত্যুর কারণে কয়েকটি উপ-নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে দুইটিতে অংশ নিয়েছে বিএনপি। এই দুইটির মধ্যে একটি আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী পরাজিত হয়েছে। অন্য উপ-নির্বাচনগুলোতে বিএনপি অংশ নেয়নি। আর চার হাজার ২৯৮টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে দুই হাজার ১৯৭টিতেই হেরেছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ৩০০ আসনের মধ্যে ২৬২টিতেই বিজয়ী হয়েছিলো। এর ২৪ দিন পরই অনুষ্ঠিত ৪৭৫টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ একক আধিপত্য বজায় রেখে ৩০৪টিতে জয়ী হয়। এর পর যতই দিন যেতে থাকে, আওয়ামী লীগের পরিণতি পরাজয়ের দিকে ধাবিত হতে থাকে। এ পরাজয়ের বিপক্ষের যুক্তি হিসেবে আওয়ামী লীগ সব সময়ই বলেছে :গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন এবং দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব তা প্রমাণ হয়েছে, জনগণের রায়কে দল মেনে নিয়েছে, এটা স্থানীয় নির্বাচন, জাতীয় নির্বাচন না। এতে জাতীয় রাজনীতির ওপর প্রভাব পড়ে না। আবার দলের দুর্বলতার কারণে নির্বাচনে পরাজয়ের কথা স্বীকার করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথাও তুলছেন কেউ কেউ। প্রবীণ নেতাদের মতে, দলের সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকা নেতারা সংগঠন গোছানো, সংগঠনে ঐক্য প্রতিষ্ঠা, সংগঠনকে শক্তিশালী করতে সঠিক দায়িত্ব পালনে বিগত সাড়ে চার বছরে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছেন।
ক্ষমতাসীন হওয়ার পর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রথম পরাজয়ের সূচনা হয়। ২০১০ সালের ১৭ জুন অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী পরাজিত হন বিএনপি প্রার্থী এম মঞ্জুর আলম মঞ্জুর নিকট। ৯৫ হাজার ৫২৮ ভোটের বিশাল ব্যবধানে মঞ্জুর হারিয়ে দেন তারই রাজনৈতিক গুরু মহিউদ্দিন চৌধুরীকে। চট্টগ্রাম নির্বাচনে দল মহিউদ্দিন চৌধুরীকে সমর্থন দিলেও তার পক্ষে মাঠে নামেননি স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাগণ। আওয়ামী লীগের পরাজয় আরো দৃশ্যমান হয়ে উঠে ২০১১ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনসমূহে। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা ও জনপ্রিয়তা নিয়ে সরকার গঠন করেও আওয়ামী লীগ দুই বছরের মাথায় নির্বাচনের রাজনীতিতে এসে হোঁচট খেয়েছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে পিছিয়ে পড়ে জাতীয় নির্বাচনেও ভরাডুবি হয় বিএনপির কাছে। পৌরসভা নির্বাচনগুলোতে আওয়ামী লীগের ২১ জন বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। সে সময়ে দলের অভিজ্ঞ নেতাদের বিশ্লেষণে চিহ্নিত হয়েছিল পরাজয়ের নানা কারণ। বিশেষত দলে ভুল প্রার্থী মনোনয়ন দান, দলীয় কোন্দল এবং বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের অদক্ষতা ও সরকারের জনপ্রিয়তা ঘাটতির কারণে পৌরসভা নির্বাচনে প্রত্যাশিত ফল লাভ করেনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। পৌরসভার রেশ না কাটতেই শাসক দল আবারও পরাজিত হয় হবিগঞ্জ-১ উপ-নির্বাচনে। দলের প্রবীণ নেতা দেওয়ান ফরিদ গাজীর মৃত্যুর পর শূন্য হওয়া সংসদীয় আসনটিতে জয় ধরে রাখতে ব্যর্থ হয় আওয়ামী লীগ। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জয় হয়েছিল। তারপর নবগঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আবারও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলের প্রার্থী পদ নিয়ে দেখা দেয় বিরোধ। এ নির্বাচনে দল সমর্থিত প্রার্থী শামীম ওসমান লক্ষাধিক ভোটে পরাজিত হন বিদ্রোহী প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াত্ আইভীর নিকট। ২০১১ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নবগঠিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আবারও পরাজিত হন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী। দলের দুই বিদ্রোহী প্রার্থীকে নির্বাচনের মাঠ থেকে নিষ্ক্রিয় করার উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে নির্বাচনে বিএনপি থেকে অব্যাহতি পাওয়া সম্মিলিত নাগরিক কমিটির নেতা মনিরুল হক সাক্কু সহজ জয় পান। এছাড়া গত ২০১১ সালের ৩১ মে থেকে শুরু হয়ে ৫ জুলাই পর্যন্ত অনুষ্ঠিত দেশব্যাপী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলে বিএনপি। ইউপি নির্বাচনে প্রায় প্রত্যেক জায়গায় ছিল আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী। মোট ৪২৯৮টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ২১০১, বিএনপি সমর্থিত ১৬১৮, জাতীয় পার্টি সমর্থিত ৮৪ জন প্রার্থী জয় লাভ করে। এ নির্বাচনে দল হিসেবে আওয়ামী লীগ এগিয়ে থাকলেও তাদের ভোট ব্যাংকে আঘাত করে বিরোধী দল বিএনপি। চলতি বছর অনুষ্ঠিত রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জয় লাভ করে। এবছর ১৫ জুন খুলনা, রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিটিতেই আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা পরাজিত হয়। এ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরাজয়ের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তার ধস দলের ভেতরে ব্যাপক আলোচনার ঝড় তোলে।
এবার গাজীপুর সিটি নির্বাচন গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন ও বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া। ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার পর থেকে গুলশানের বাসভবনে বসেই নির্বাচন সংক্রান্ত খোঁজ নেন বেগম জিয়া। তিনি গণমাধ্যম, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের মাধ্যমে গাজীপুর সিটি নির্বাচনের খবরা-খবর রাখেন। এছাড়া গুলশান অফিসের কর্মকর্তাগণ বেগম জিয়াকে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পাঠিয়েছেন। কোনো নির্দেশনা থাকলে সাথে সাথে নেতাদের তা জানিয়ে দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন। এছাড়া ভোটগ্রহণ শেষে বাসায় টেলিভিশনের সহায়তায় ভোটের ধারাবাহিক ফলাফল প্রত্যক্ষ করেন তিনি। গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে চিকিত্সাধীন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও স্থায়ী কমিটির সদস্য তারেক রহমানেরও আগ্রহের কমতি ছিল না। তিনি তার বিশ্বস্ত নেতাদের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নিয়েছেন নয়াপল্টন বিএনপি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিএনপির হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাচন চলাকালে নানা শঙ্কা থেকে গাজীপুর সীমানা ঘেঁষে থাকা জেলা নেতারা দিনভর অবস্থান নিয়েছিলেন। বিশেষ করে ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজধানীর উত্তরা এবং ঢাকা জেলার নেতারা সাভার এলাকায় অবস্থান নিয়েছিলেন। এছাড়া ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল সতর্ক অবস্থায় প্রস্তুত ছিল। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যান, ১৮ দলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষনেতা ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির যুগ্ম মহাসচিবসহ সারাদিন ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা সতর্ক অবস্থায় ছিলেন গাজীপুরের আশপাশে। ফল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত তাদের যার যে দায়িত্ব তা পালন করেছেন। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার এক ঘন্টা আগে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক সংবাদ সম্মেলনে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, "ফল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত কেউই ভোট কেন্দ্র ছেড়ে যাবেন না।"
স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে জাতীয় পর্যায়ে নেতৃবৃন্দের তদারকি এবং নির্দলীয় প্রার্থীদের উপর দলীয় প্রচারণা ও চ্যালেঞ্জকে জাতীয় নির্বাচনমুখী উদ্যোগ বলে বিশ্লেষণ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। নির্বাচনের ফলাফলের পর বেগম খালেদা জিয়া দলীয় নেতা ও কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, উত্ফুল্ল না হয়ে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নেন। তবে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠক করে বলেছেন : গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও উন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও দলীয় সরকারের অধীনে সংবিধানসম্মত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে গণতন্ত্রের প্রতি তার সুদৃঢ় ও ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশিত হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার রকিবউদ্দিন আহমেদ বলেছেন: নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হয়েছে, ফলাফল মেনে নেয়ার সংস্কৃতি গঠন করুন। তার এ বক্তব্যের মর্মার্থ উপলব্ধি করা উচিত প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোরনেতৃবৃন্দের।
গাজীপুর নির্বাচনের প্রতিক্রিয়ায় যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, "জনগণের কাছে দুর্ভেদ্য দুর্গ বলে কিছু নেই। জনগণ যে-কোন দুর্গই ভেঙে দিতে পারে, যদি তারা আস্থা হারায়।" গাজীপুর নির্বাচন স্থানীয় পর্যায়ের হলেও এ থেকে শিক্ষা নিয়ে সরকারকে জাতীয় পর্যায়ে অগ্রসর হতে হবে। এ নির্বাচন সরকারের জন্য অবশ্যই বার্তাবহ। এ নির্বাচন সরকারকে কী সতর্কবার্তা দিয়ে গেল তা নিয়েও গভীরভাবে ভাবতে হবে সরকারকে।
niZv‡ji Acg„Zz¨ n‡q‡Q, wU‡K Av‡Q mš¿vm I bvkKZv
†fv‡ii KvMR : iweevi, 7
RyjvB 2013
†`‡ki mKj
miKvi niZv‡ji weiæ‡× †mv”Pvi _v‡K, niZv‡ji ÿqÿwZ Zz‡j a‡i| A_P we‡ivax `‡j
_vK‡j niZvj‡K ivRbxwZi gviYv¯¿ wn‡m‡e e¨envi K‡i| miKviwe‡ivax Av‡›`vj‡bi bv‡g
g~jZ RbM‡Yi we‡iv‡a niZvj‡K e¨envi K‡i| KviY Zv‡Z RbM‡Yi ¯^vfvweK RxebhvÎv
e¨vnZ nq| ÿwZ nq †`‡ki A_©bxwZ, e¨emv-evwYR¨ I wkÿv e¨e¯’vi| cÖavb ivR‰bwZK `j
wn‡m‡e evsjv‡`k AvIqvgx jxM, weGbwc I RvZxq cvwU© RvZxq msm‡` Avjvc-Av‡jvPbvi
gva¨‡g niZvj‡K wbwl× Ki‡Z cvi‡Zv| wKš‘ Zv K‡iwb| µgvMZ niZv‡j RbM‡Yi Rvbgv‡ji
†h Ac~iYxq ÿwZ n‡q‡Q Zv Avi KL‡bv cywl‡q w`‡Z cvi‡e bv †Kv‡bv ivR‰bwZK `j| †Lv`
fvi‡Z ïiæ nIqv eb&a ev niZvj GLb Avi †Zgb †bB| A_P evsjv‡`‡k RbRxe‡bi AvZ¼,
Mvwo fvOPzi, R¡vjvI-†cvovI Pj‡QB| AvBbk„•Ljv iÿvKvix evwnbx‡K eQie¨vcx e¨¯Í
_vK‡Z n‡”Q niZvjwfwËK mwnsmZv I bvkKZv cÖwZ‡iv‡a| †kl ch©šÍ evsjv‡`k-IqvwksUb
mš¿vmwe‡ivax Pzw³ n‡Z hv‡”Q AvMvgx‡Z| B‡Zvg‡a¨ fvi‡Zi m‡½ evsjv‡`k miKv‡ii
mš¿vmwe‡ivax mn‡hvwMZv, Acivax I e›`x wewbgq Pzw³I m¤úvw`Z n‡q‡Q| cÖavb
ivR‰bwZK `j¸‡jvi cÖavbiv fvi‡Z wM‡q A½xKvi K‡i‡Qb GB g‡g© †h, evsjv‡`‡ki
f‚-LЇK fvi‡Zi weiæ‡× mš¿vmx Kvh©Kjv‡c e¨envi Ki‡Z †`qv n‡e bv| AZGe, evsjv‡`k
miKvi mš¿vmwe‡ivax Awfhvb †Rvi`vi, Rw½ wbg~©j I bvkKZv cÖwZ‡iv‡a AvBbMZ K‡Vvi
e¨e¯’v MÖn‡Y m`v m‡Pó| m¤úªwZ wkwe‡ii WvKv mKvj-mܨv niZv‡j ivRavbxi †Kv_vI
†Kv‡bv cÖKvi cÖfve c‡owb| XvKvi evB‡ii cwi‡ekI wQj Zzjbvg~jKfv‡e kvšÍ| Gw`b
RxebhvÎv wQj m¤ú~Y© ¯^vfvweK| cvewjK cwienb PjvP‡j bMix‡Z ixwZg‡Zv hvbRU m„wó
n‡q‡Q| †`vKvbcvU, gv‡K©U I kwcsgj¸‡jv †Lvjv wQj Ab¨w`‡bi g‡Zv| gvbylRb mKvj
†_‡K wbf©‡q Ni †_‡K †ei n‡q‡Q| RvZxq wek¦we`¨vj‡qi Abvm© ch©v‡qi cixÿv¸‡jv
h_vixwZ AbywôZ n‡q‡Q| niZvj Avi Av‡Mi g‡Zv mvov cv‡”Q bv RbM‡Yi Kv‡Q| RvZxq
msm‡` niZvj wbwl× bv n‡jI evsjv‡`‡ki RbM‡Yi Kv‡Q mwnsm niZv‡ji Acg„Zz¨ N‡U‡Q|
niZvj
AvnŸvbKvix QvÎwkwe‡ii g~j msMVb Ges Rvgv‡Zi Awdm GjvKvq I gv‡V †`Lv †g‡jwb
niZvj AvnŸvbKvix‡`i| ivRavbxi eo gMevRvi GjvKvq Aew¯’Z RvgvZ Kvh©vj‡qi g~j dUK
wQj m¤ú~Y© eÜ| cÖ_gev‡ii g‡Zv niZv‡ji g‡a¨ AbywôZ n‡jv RvZxq wek¦we`¨vj‡qi
Abvm© Z…Zxq e‡l©i cix¶v| Gw`‡K hy×vcivax‡`i m‡e©v”P kvw¯Íi `vwe‡Z M‡o IVv
MYRvMiY g niZvjwe‡ivax wgwQj K‡i‡Q| RbMY Zv‡Z mvov w`‡q‡Q wkwe‡ii †K›`ªxq
mfvcwZi gyw³ I wb‡LuvR †bZv‡`i mÜv‡bi `vwe‡Z wkwei G niZv‡ji WvK w`‡jI mvaviY
gvbyl niZvj cÖZ¨vL¨vb K‡i eywS‡q w`‡jv cÖwZwµqvkxj Pµgy³ Ges mwnsmZvgy³ †`k Pvq
RvwZ|
niZv‡j
ivRavbxi ivgcyiv ebkÖx GjvKvq Mvwo fvOPz‡ii Awf‡hv‡M `yB wkweiKg©x‡K Qq gv‡mi
Kviv`Ð w`‡q‡Q åvg¨gvY Av`vjZ| ivRavbxmn mviv †`‡k RvgvZ-wkwe‡ii 20 †bZvKg©x‡K
bvkKZv m„wói NUbvq AvUK Kiv n‡q‡Q| e¸ov miKvwi Avwhhyj nK K‡j‡Ri knx` wgbv‡i
wkwei KK‡Uj we‡ùviY NwU‡q‡Q| PÆMÖv‡g cywjk‡K j¶¨ K‡i nvZ‡evgv wb‡¶c K‡i‡Q
wkwei| wmivRMÄ, RqcyinvU, wkwe‡ii m‡½ avIqv-cvëv avIqvi NUbv N‡U‡Q| GQvov
mybvgMÄ ev‡MinvU, bvivqYMÄ, j²xcyi, MvBevÜv, ewikvj, h‡kvimn K‡qKwU †Rjvq
cwienb fvOPzi I KK‡Uj we‡ùviY NwU‡q‡Q wkwei| mwnsmZv h‡ZvB NUzK bv †Kb, RbMY
KZ…©K niZvj cvwjZ nqwb|
eis wkwe‡ii
niZvj cÖZ¨vL¨vb K‡i kvnev‡M wgwQj K‡i‡Q RbZv| hy×vciv‡ai m‡e©v”P kvw¯Íi `vwe‡Z
M‡o IVv MYRvMiY g GL‡bv mwµq| wgwQj ïiæi c~‡e© kvnevM GjKvq `ywU nvZ‡evgvi
we‡ùviY NUv‡bv n‡qwQj †Pviv¸ßvfv‡e| MYRvMiY g‡Âi gyLcvÎ Bgivb GBP miKv‡ii
†bZ…‡Z¡ GKwU wgwQj kvnevM †_‡K wUGmwm ivRy fv¯‹h© n‡q Avevi kvnev‡M KuvUveb Ny‡i
Av‡m| wgwQj †k‡l mgv‡e‡k Bgivb GBP miKvi e‡j‡Qb, RvgvZ-wkwe‡ii A‰ea niZvj gvbyl
cÖZ¨vL¨vb K‡i‡Q N„Yvf‡i| evsjv‡`‡k g‡b nq RbMY Zv‡`i Avi †Kv‡bv niZvj Ki‡Z †`‡e
bv| †`‡ki me MYRvMiY g‡ÂB niZvjwe‡ivax wgwQj K‡i‡Q| wmwU K‡c©v‡ikb wbe©vP‡b
DMÖcš’xiv ag©‡K e¨envi Ki‡Q bvbv †KŠk‡j| ¯’vbxq I wb`©jxq wbe©vP‡b RvZxq
ch©v‡qi `jxq †bZviv cÖPviYvq Ask wb‡q wbe©vPb Kwgk‡bi AvBb j•Nb K‡i‡Qb| e¸ov
miKvwi Avwhhyj nK K‡j‡Ri knx` wgbv‡i wkwei mivmwi nvgjv Pvwj‡q D”Pkw³i KK‡Uj
we‡ùviY NwU‡q‡Q| ¶wZMÖ¯Í n‡q‡Q knx` wgbv‡ii †ew`i UvBj&m| Zv‡Z dvUj a‡i
†`‡e wM‡q‡Q| cywj‡ki mvg‡bB msNwUZ Gme NUbvq wk¶K I wk¶v_©xmn me©¯Í‡ii gvby‡li
g‡a¨ wb›`vi So D‡V‡Q Ges AvZ¼ m„wó n‡q‡Q| e¸ovi myaxRb wk¶v½‡bi knx` wgbv‡ii
Ici wkwe‡ii nvgjv‡K Lv‡Uv K‡i †`‡Lwb RbMY| Zviv e‡j‡Qb, †gŠjev`x‡`i G nvgjv
cwiKwíZ| gyw³hy‡×i †PZbvi g~j¨‡ev‡ai Ici mivmwi G AvNvZ Ges †`k‡K aŸs‡mi w`‡K
†V‡j †`qvi bxjbKkv gvÎ| PÆMÖv‡g Mvwo‡Z Av¸b †`qv, KK‡Uj we‡ùviY, avIqv-cvëv
avIqv, cywjk‡K j¶¨ K‡i KK‡Uj wb‡¶cmn wewfbœ mwnsm NUbv msNwUZ n‡q‡Q| mewKQy
D‡c¶v K‡i RbRxeb ¯^vfvweK wQj e›`i bMixi gvby‡li| bMix‡Z †Lvjv wQj AwaKvsk
†`vKvbcvU, e¨emv-cÖwZôvbI| niZv‡j mwnsmZvi cwiKíbv Ges niZvj PjvKv‡j mwnsmZv
m„wói Awf‡hv‡M cywjk bMixi wewfbœ GjvKv †_‡K g½jevi Mfxi ivZ †_‡K eyaevi mKvj
ch©šÍ GK RvgvZ †bZvmn 6 Rb‡K AvUK K‡i‡Q Ges bMiRy‡o K‡Vvi wbivcËv e¨e¯’v MÖnY
Kiv nq| Rvgv‡Zi QvÎ msMVb QvÎwkwei‡K niZv‡ji Kg©m~wP‡Z msMwVZ K‡i Pv½v Kiv‡bvi
†ek †Póv Kiv n‡”Q| Riæwi ¸iæZ¡c~Y© I RvZxq Bmy¨wenxb niZv‡ji WvK †`qvi ci
†bZvKg©xiv Av‡Mi g‡Zv Rw½ g‡bvfve wb‡q gv‡V bv _vKvq QvÎwkwe‡ii g‡a¨I wefw³ I
nZvkv †b‡g G‡m‡Q| AvBbk„•Ljv evwnbxi K‡Vvi f‚wgKvi Kvi‡Y niZv‡ji mg‡q gv‡V
`uvov‡ZB cv‡iwb QvÎwkwei| QvÎwkwe‡ii mfvcwZ †`‡jvqvi †nv‡mb †MÖßvi n‡q‡Q MZ
gvP© gv‡m| MZ wZb gvm a‡i Zvi gyw³i `vwe‡Z †Kv‡bv cÖej Av‡›`vjb M‡o †Zvjv nqwb|
wZb gvm ci nVvr K‡i Zvi gyw³i `vwe‡Z niZvj WvKvq QvÎwkwe‡ii g‡a¨B weZK© I wefw³
†`Lv w`‡q‡Q| hy×vcivaxi gyw³i `vwe I wePvi e‡Üi `vwe‡Z niZv‡ji WvK bv w`‡q ïay
QvÎwkwe‡ii mfvcwZi †MÖßv‡ii wZb gvm ci gyw³i `vwe I wb‡LuvR‡`i mÜv‡bi `vwe‡Z
WvKv niZv‡j RbRxe‡b †Zgb †Kv‡bv cÖfve c‡owb| ivRavbx XvKvmn mviv †`‡k wew”Qbœ
wKQy NUbv Qvov wkwe‡ii WvKv niZv‡ji mg‡q RbRxeb wQj †gvUvgywU ¯^vfvweK| RbMY
GUvB †P‡qwQj †h, A‡hŠw³K niZvj †hb Avi bv nq| MZ gvP© gv‡m niZv‡j bvkKZvi
gvgjvq †MÖßvi Kiv nq QvÎwkwe‡ii †K›`ªxq mfvcwZ †`‡jvqvi †nv‡mb‡K| †MÖßv‡ii ci
wewfbœ gvgjvq Zv‡K K‡qK `dv wigv‡Û †bqv nq| wigv‡Û wb‡q hy×vcivaxi gyw³i `vwe‡Z
I wePvi e‡Üi `vwe‡Z RvgvZ-wkwe‡ii bvkKZvi e¨vcv‡i wRÁvmvev` Kiv nq| wRÁvmvev‡`
PvÂj¨Ki I ¸iæZ¡c~Y© Z_¨ w`‡q‡Qb wZwb| QvÎwkwei ZLb niZvj †W‡K eo ai‡bi †Kv‡bv
Av‡›`vjb M‡o Zzj‡Z cv‡iwb| wKQz w`b Av‡M nVvr K‡iB Avevi niZvj WvK w`‡q AÁvZ
Kvi‡Y cÖZ¨vnvi K‡i †bq Zviv| ZLb ¯^ivóªgš¿x gnxDÏxb Lvb AvjgMxi e‡jwQ‡jb, f‡q
QvÎwkwei niZvj cÖZ¨vnvi K‡i‡Q| †mB niZvj cÖZ¨vnvi K‡i †bqvi ci Ggb Kx NUbv N‡U
†M‡jv †h wZbw`‡bi e¨eav‡b Avev‡iv niZv‡ji WvK †`qv n‡jvÑ GUv Rbg‡bi wRÁvmv| Gme
NUbvq wkwe‡ii g‡a¨B gZwe‡iva †`Lv w`‡q‡Q|
QvÎwkwe‡ii
WvKv niZv‡ji †Kv‡bv †hŠw³K KviY bv _vKvq wg_¨v I †Luvov ARynvZ †`qv n‡q‡Q e‡j
`vwe K‡i‡Qb AvBbk„•Ljv evwnbx| ivRavbx XvKvi RbRxe‡b mKv‡j niZv‡ji Lye GKUv cÖfve
†`Lv hvqwb| cÖvB‡fU Mvwo PjvPj Kg n‡jI Ab¨ meB Pj‡Q ¯^vfvweKfv‡e| niZv‡ji
mg_©‡b K‡qKwU ¯’v‡b wkwei wgwQ‡ji †Póv Pvjv‡jI cywjk avIqv K‡i Zv‡`i nwU‡q
w`‡q‡Q| d‡j niZv‡ji g‡a¨I XvKvq MYcwienb Pj‡Q Ges †Uªb, jÂ, wegvb PjvPj
¯^vfvweK wQj|
†Mv‡q›`v m~Î
Abyhvqx, Rvgv‡Zi QvÎ msMVb QvÎwkwe‡ii cv‡qi Zjv †_‡K gvwU m‡i †M‡Q| gv_v Zz‡j
`uvov‡Z cvi‡Q bv Zviv| G Rb¨B QvÎwkwei †iveevi mviv †`‡k mKvj-mܨv niZv‡ji WvK
w`‡q ci¶‡YB wcQzUvb w`‡q Zv cÖZ¨vnvi K‡i wb‡q‡Q| QvÎwkwei hy×vcivax‡`i euvPv‡Z
wM‡q wb‡RivB †du‡m †M‡Q| cywjk nZ¨v, cywj‡ki Ici AvµgY, cywj‡ki Mvwo‡Z Av¸b,
fvOPzi, KK‡Uj-†evgv ˆZwi I we‡ùviY NUv‡bv, bvkKZv Ges ˆbivR¨Ki cwiw¯’wZi NUbvq
GLb gvgjv-†gvKÏgvq Avmvwg n‡q ivRc‡_ Avbv hv‡”Q bv Zv‡`i| wkwe‡ii †bZvKg©x‡`i
g‡bvej Pv½v K‡i msMwVZ Kiv‡bvi Rb¨ cybivq A‡hŠw³K niZvj WvKv n‡qwQj| GQvovI
†ndvR‡Z Bmjv‡gi †bZvKg©x‡`i weMZ †g gv‡m kvcjv PZ¡i †_‡K gvÎ `k wgwb‡Ui Awfhvb
Pvwj‡q nwU‡q †`qvi ci †_‡K QvÎwkwe‡ii g‡a¨I nZvkv †b‡g G‡m‡Q| G‡Z cywjkmn
AvBbk„•Ljv evwnbxi m`m¨‡`i g‡a¨ RvgvZ-wkwei I †ndvR‡Z Bmjv‡gi mwnsmZv `g‡b
Av¯’vi m„wó n‡q‡Q| RbM‡Yi cÖwZ fimvi m„wó n‡q‡Q AvBbk„•Ljvi evwnbxiI| G Kvi‡Y
QvÎwkwei niZv‡ji WvK w`‡q gv‡V †b‡g nq cjvZK, bq‡Zv niZvj cÖZ¨vnvi K‡i wb‡”Q|
niZv‡ji WvK w`‡q gv‡V †b‡g mwnsm NUbv NUv‡bvi Av‡MB cywj‡ki Zvov †L‡Z n‡”Q
Zv‡`i| G Rb¨ niZv‡ji WvK †`qv n‡jI wkwe‡ii †bZvKg©x‡`i gv‡V bvgv‡bv hv‡”Q bv
cÖPzi UvKv LiP K‡iI| Av`vjZ KZ©„K wPwýZ hy×vcivax †bZv‡`i cv‡k `uvov‡Z wM‡q QvÎ
msMVbwU mwnsm Av‡›`vjb M‡o Zzj‡Z wM‡q weMZ eQi¸‡jv‡Z nvRvi nvRvi †bZvKg©x
gvgjvi Avmvwg n‡q‡Q| G‡Z `jwUi ZiæY I bevMZ †bZvKg©xiv cvwj‡q †eov‡”Qb|
†bZvKg©x‡`i AvZ¥‡Mvc‡b P‡j hvIqvi Kvi‡Y `jwUi †giæ`Ð †f‡O †M‡Q| GLb `jwU
g„ZcÖvq ivR‰bwZK `‡j cwiYZ n‡Z hv‡”Q| weGbwci mnvqZvq RvgvZ wU‡K _vK‡jI Rvgv‡Zi
Kvi‡Y †eMg Lv‡j`v wRqvi ivR‰bwZK fveg~wZ© webó n‡q‡Q cÖejfv‡e|
Bmjvgx
QvÎwkwe‡ii eZ©gvb mfvcwZ †`‡jvqvi †nv‡mb I mv‡eK mfvcwZ Wv. dKiæj Bmjvg gvwbK
AvZ¥‡Mvc‡b P‡j hvIqvi ciI cywj‡ki nv‡Z †MÖßvi nb MZ gvP© gv‡m| wRÁvmvev‡` Z_¨
Rvbv †M‡Q, mwnsmZv I bvkKZv hy×vcivaxi wePvi †VKv‡bvi Rb¨ QvÎwkwe‡ii Ici
Rvgv‡Zi †bZv‡`i wb‡`©k i‡q‡Q| AvBbk„•Ljv evwnbxi Ae¨vnZ Awfhv‡bi gy‡L wkwe‡ii
mvsMVwbK kw³ `ye©j n‡q c‡o‡Q| hy×vcivaxi wePvi †VKv‡bv ev gv‡V Av‡›`vjb M‡o
†Zvjv wKsev niZv‡ji WvK w`‡q Zv mdj Kivi g‡Zv kw³ µgvMZ nvwi‡q †d‡j‡Q QvÎwkwei|
RbM‡Yi weiæ‡× A‡hŠw³K niZvj, niZvjwfwËK mš¿vm I bvkKZv KL‡bv wU‡K _vK‡Z cv‡i
bv| cÖwkÿY w`‡q Ges A_© I A¯¿ mieivn K‡i ZiæY‡`i wec_Mvgx K‡iI †kl ch©šÍ cÖej
Rbg‡Zi Kvi‡Y Ges AvBbk„•Ljv evwnbxi ZrciZvi Rb¨ †kl ch©šÍ A‡hŠw³K I mwnsm
niZv‡ji Acg„Zz¨ NU‡jv|
iZbZby †Nvl : cÖvewÜK I M‡elKratantanukc@yahoo.com
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন :সংশয় ও শঙ্কা
রতনতনু ঘোষ
আর
মাত্র পাঁচ-ছয় মাস পর আগামী দশম সাধারণ নির্বাচন নিয়ে জনমনে শঙ্কার কারণ
সৃষ্টি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুস্পষ্টভাবে বার বার বলেছেন,
অসাংবিধানিক ও অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা দেয়া হবে না। নির্বাচনকে
সুষ্ঠু ও অবাধ করার জন্য অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো বাংলাদেশে
নির্বাচন হবে। তাতে সকল দলের অংশগ্রহণ থাকবে। ফলাফল যাই হোক মেনে নেয়া হবে
এবং জনগণ যাকে নির্বাচিত করে তার হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে। বিরোধী
দলের কিছু প্রস্তাব থাকলে, দাবি থাকলে তা সংসদে এসে পেশ করলে আলোচনা করা
হবে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ অন্যান্য দল টানা ৮৩ দিন সংসদের বাইরে
থাকার পর জাতীয় সংসদে যোগ দিয়েছে। বিএনপি কর্তৃক তত্ত্বাবধায়ক ইস্যু নিয়ে
আলোচনার জন্য নোটিস দিয়েও তা শেষ পর্যন্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে। সরকারি
দলও এ ব্যাপারে আর আলোচনা করেনি। ফলে আলোচনার এ ইস্যুটি উপেক্ষিত হলো।
চার সিটি কর্পোরেশনে বিরোধী দলের মেয়র প্রার্থীদের বিজয়ের পর তাদের
অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রমাণিত হলো নির্বাচন কমিশন
স্বাধীন। দলীয় সরকারের অধীনেও সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচন হওয়া সম্ভবপর। কাজেই
আগামী নির্বাচনের জন্য অসাংবিধানিক সরকার আর দাবি করা ঠিক হবে না। পুনরায়
দেশে ১/১১-এর ন্যায় পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হলে কারো রেহাই হবে না। এবার
তত্ত্বাবধায়ক এলে কেয়ামত পর্যন্ত তারা ক্ষমতায় থাকতে চাবে এবং নির্বাচন আর
নাও অনুষ্ঠিত হতে পারে। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রীর আরো
শঙ্কা হলো, এবার তিনি ও বিরোধী দলীয় নেত্রী উভয়ই কারাগারে যাওয়ার
সম্ভাবনা রয়েছে। সুতরাং দূরদৃষ্টি, প্রজ্ঞা ও সহিষ্ণুতার মাধ্যমে সমস্যার
সমাধান করা মঙ্গলজনক। সংসদ, সংবিধান ও গণতন্ত্র সুরক্ষার জন্য আগামী
নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করতে হবে। প্রধান বিরোধী দলের মহাসচিব
প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যে অগণতান্ত্রিক ও রাষ্ট্রদ্রোহী বলে অভিযোগ
করেছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের মতে, সরকার
মেয়র নির্বাচন ও স্থানীয় পর্যায়ে জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হয়ে আগামী
নির্বাচনে ভরাডুবির আশংকায় জাতীয় নির্বাচন তত্ত্বাবধায়কের হাতে দিতে ভয়
পান। এসব বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য হলো: 'মিথ্যাচার
করবেন না। সংসদে আমার বক্তব্য ছিল, আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসলে দেশে আর
নির্বাচন নাও হতে পারে।... অথচ আমার সেই বক্তব্য বিকৃত করে প্রকাশ করা হলো
তত্ত্বাবধায়ক চাইলে নির্বাচনই হবে না। সাংবিধানিক প্রক্রিয়া থেকে শেখ
হাসিনা সরবেন না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যর্থ উপদেষ্টাদের কথা তিনি শুনবেন
না'। অন্যদিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচনে যাবেন
না এবং দেশে নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয়
নেত্রীর পরস্পর বিরোধী বক্তব্যে আগামী নির্বাচনের সরকার নিয়ে অমীমাংসার
ফলে তৃতীয় শক্তি অথবা অসাংবিধানিক শক্তি সুযোগের অপেক্ষায় আছে এমন কথাও
শোনা যাচ্ছে। বিদেশি কূটনৈতিক ও প্রভাবশালী মহল সংলাপের মাধ্যমে দেশের
অভ্যন্তরীণ রাজনীতির সমাধান চাইলেও সময় অতি দ্রুত পেরিয়ে যাচ্ছে অমীমাংসার
অবস্থা নিয়েই। এতে সুস্থ রাজনীতির ধারা, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও
সংবিধানসম্মত ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ার আশংকা তৈরি হয়েছে। তৃতীয় শক্তির
প্রতিনিধি হিসেবে দেশের তিনবাহিনী প্রধানগণ আবির্ভূত হবেন না। তারা
সংবিধানের ধারাবাহিকতার পক্ষে অটল থাকার অঙ্গীকার করেছেন। বিরোধী দল
অর্থাত্ ১৮ দলীয় জোট বিগত প্রায় ৪ বছর ধরে এ ইস্যু নিয়ে রাজপথে উত্তাল
আন্দোলন করেও সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারেনি। সরকারকে পঙ্গু করে
টেনে-হিঁচড়ে নামানোর হুমকি দিয়েও সফল হয়নি। উপরন্তু হরতালের নামে নাশকতা ও
অগ্নিসংযোগের কারণে গ্রেফতার হয়েছেন এবং জামিনে কারামুক্ত হয়েছেন বার
বার। সুশীল সমাজ তথা তত্ত্বাবধায়কপন্থীদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন,
অনির্বাচিতদের হাতে এবং নির্দলীয়দের হাতে আর ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে না।
নির্বাচনের আগে জোট ও মহাজোটের মধ্যে ভাঙা-গড়ার আশংকা রয়েছে। এরশাদ
মহাজোট থেকে সরে যাওয়ার পাঁয়তারা করছেন। বিকল্পধারা, এলডিপিসহ অন্যান্য
দলও জোটবদ্ধ নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছে। বাস্তবে আগামী নির্বাচনের
জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সুদৃঢ় ঘোষণা থাকলেও সরকার ও বিরোধী দলের
মধ্যে এ বিষয়ে কোনো কার্যকর আলোচনা, নতুন প্রস্তাব, সংলাপ এবং সমঝোতা
প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এতে জনগণও শঙ্কিত এবং ভীত। কারণ সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ
নির্বাচন করা মূলত নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব।
নির্বাচনে সকল দলের অংশগ্রহণ না হলে তা দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্য হবে না। আবার নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ করার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি পরিপূর্ণ সমর্থন দানের ও বিশ্বাসযোগ্যতার ব্যাপারটিও আলোচনার বিষয়। যদিও দেশে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার স্থানীয় পর্যায়ের সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। স্বাধীন ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন ক্রমশ আরো গ্রহণযোগ্য হয়েছে দেশের চার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিরোধী দলের বিজয়ের পর। এতে বিরোধী দল জাতীয় নির্বাচনে উত্সাহিত হয়েছে। ভেতরে ভেতরে নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছে। কারণ স্থানীয় নির্বাচনের জয়ের ধারা জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ের সম্ভাবনায় তারা আনন্দিত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনকে কারচুপিমুক্ত ও নিরপেক্ষ করার জন্য অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। বাস্তবে সমঝোতাহীন রাজনীতি, অমীমাংসিত নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সামগ্রিকভাবে শঙ্কা কাটেনি। প্রধানমন্ত্রীর প্রাণনাশের আশঙ্কা ও হুমকির কথা তিনিসহ বিভিন্ন মন্ত্রী বার বার উল্লেখ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী আগামী তত্ত্বাবধায়কের অধীনে সম্ভাব্য আশঙ্কাজনক পরিস্থিতির কথা অকপটে প্রকাশ করে জাতিকে সতর্ক করেছেন। বিরোধী দলকেও এ সতর্কবার্তা নিয়ে ভাবতে হবে। আলাপ-আলোচনা করা প্রয়োজন, এ বিষয়টি জরুরি বিবেচনা করে। ইতোপূর্বে টাইমস অব ইন্ডিয়া আগামী নির্বাচনের বিষয়ে শঙ্কার কথা বলেছিল। সম্প্রতি দৈনিক আনন্দবাজারও নির্বাচনকালীন সম্ভাব্য শঙ্কা ও সংঘর্ষের কথা প্রকাশ করেছেন। এছাড়া মার্কিন প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানও আগামী নির্বাচনে শঙ্কা ও সন্ত্রাসের আশংকার কথা বলেছেন। আগামী নির্বাচন হবে না এমন কথা কেউ বলছেন না। তবে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে অমীমাংসার ফলে শঙ্কার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। সরকারি দলের এমপিরা মন্ত্রীদের আর মন্ত্রীরা এমপিদের দোষারোপ করেছেন সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভরাডুবির জন্য। বাস্তবে দুটি রাজনৈতিক জোটই দলকে সংগঠিত করছেন, কর্মী সমাবেশ করছেন এবং নির্বাচনমুখী প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর শঙ্কাপূর্ণ উক্তি, বিরোধী নেতা-নেত্রীদের আক্রমণাত্মক বক্তব্য সৃষ্টি করেছে রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতা ও সমঝোতাহীনতার। রাজনীতিকে সুস্থ ধারায় চালিত করতে হলে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও গণতান্ত্রিক রীতিনীতি মান্য করার সংস্কৃতি গড়ে তোলা আবশ্যক। সংসদে অসংসদীয় ভাষা প্রয়োগ আর পারস্পরিক কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি করে কালক্ষেপণ না করে আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে সাংগঠনিক ও গণতান্ত্রিক ধারা রক্ষায় রাজনৈতিক অঙ্গীকার প্রকাশিত হোক রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্য থেকে। তাহলে গণমনের আশঙ্কা দূর হবে এবং গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত থাকবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচন প্রক্রিয়া একটি অপরিহার্য উপাদান হলেও তা গণতন্ত্রের একমাত্র শর্ত নয়। জনগণের ভোটে বিজয়ী হয়ে সুদীর্ঘ সময় সংসদ বর্জন, জনগণের পক্ষে সঠিক ভূমিকা পালন না করা, গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও সংস্কৃতি পালন না করা গণতন্ত্র অনুশীলনের পথে বড় ধরনের অন্তরায়। যারাই বিজয়ী হোন না কেন গণতান্ত্রিক মন-মানসিকতা ও আচরণ নিয়ে জনগণের প্রয়োজন ও আকাঙ্ক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। হঠাত্ করে তা হবে না। অশুভ শক্তির অসাংবিধানিক তত্পরতার শঙ্কা দূর করে সংবিধান ও গণতান্ত্রিক রীতির পক্ষে সরকারি ও বিরোধী দলের সঠিক ও শক্ত অবস্থানই গণতন্ত্রকে অগ্রসর করতে পারে।
শুধু ক্ষমতামুখী রাজনীতি আর নির্বাচনে যেনতেনভাবে বিজয়ী হওয়ার সুকৌশল দূর করতে হবে। দেশ হতে সর্বাত্মকভাবে দুর্নীতি দূর করতে জাতীয়ভাবে কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। তাতে সরকার ও বিরোধী দলের পারস্পরিক সহযোগিতামূলক তত্পরতা প্রয়োজন। দেশ জনগণের। জনগণের আকাঙ্ক্ষা, নিরাপত্তা, উন্নয়ন ও কল্যাণের স্বার্থেই রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক ধারাকে অব্যাহত রাখা জরুরি। কাজেই আগামী সাধারণ নির্বাচন নিয়ে যে অনিরাপত্তা, সন্ত্রাস ও শঙ্কার ধারণা গড়ে উঠেছে বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে তা দূর করার দায়িত্ব সরকার ও বিরোধী দলের। রাজনীতি হোক দেশোন্নয়ন ও জনকল্যাণের জন্য। ব্যক্তি বা দলের সংকীর্ণ স্বার্থ পেরিয়ে জাতীয় স্বার্থ প্রাধান্য পাক রাজনীতিতে জনগণ তা চায়। নিজেদের রেষারেষি থেকে সৃষ্ট শঙ্কা দূর করতে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকেই অগ্রণী ও সৃজনশীল ভূমিকা রাখতে হবে। যত দ্রুত রাজনৈতিক প্রজ্ঞার ও সদিচ্ছার প্রসার ঘটিয়ে শুভবুদ্ধির উদয় হবে ততই মঙ্গল।
লেখক : প্রাবন্ধিক ও গবেষক
ই মেইল :ratantanukc@yahoo.com
নির্বাচনে সকল দলের অংশগ্রহণ না হলে তা দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্য হবে না। আবার নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ করার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি পরিপূর্ণ সমর্থন দানের ও বিশ্বাসযোগ্যতার ব্যাপারটিও আলোচনার বিষয়। যদিও দেশে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার স্থানীয় পর্যায়ের সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। স্বাধীন ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন ক্রমশ আরো গ্রহণযোগ্য হয়েছে দেশের চার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিরোধী দলের বিজয়ের পর। এতে বিরোধী দল জাতীয় নির্বাচনে উত্সাহিত হয়েছে। ভেতরে ভেতরে নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছে। কারণ স্থানীয় নির্বাচনের জয়ের ধারা জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ের সম্ভাবনায় তারা আনন্দিত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনকে কারচুপিমুক্ত ও নিরপেক্ষ করার জন্য অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। বাস্তবে সমঝোতাহীন রাজনীতি, অমীমাংসিত নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সামগ্রিকভাবে শঙ্কা কাটেনি। প্রধানমন্ত্রীর প্রাণনাশের আশঙ্কা ও হুমকির কথা তিনিসহ বিভিন্ন মন্ত্রী বার বার উল্লেখ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী আগামী তত্ত্বাবধায়কের অধীনে সম্ভাব্য আশঙ্কাজনক পরিস্থিতির কথা অকপটে প্রকাশ করে জাতিকে সতর্ক করেছেন। বিরোধী দলকেও এ সতর্কবার্তা নিয়ে ভাবতে হবে। আলাপ-আলোচনা করা প্রয়োজন, এ বিষয়টি জরুরি বিবেচনা করে। ইতোপূর্বে টাইমস অব ইন্ডিয়া আগামী নির্বাচনের বিষয়ে শঙ্কার কথা বলেছিল। সম্প্রতি দৈনিক আনন্দবাজারও নির্বাচনকালীন সম্ভাব্য শঙ্কা ও সংঘর্ষের কথা প্রকাশ করেছেন। এছাড়া মার্কিন প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানও আগামী নির্বাচনে শঙ্কা ও সন্ত্রাসের আশংকার কথা বলেছেন। আগামী নির্বাচন হবে না এমন কথা কেউ বলছেন না। তবে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে অমীমাংসার ফলে শঙ্কার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। সরকারি দলের এমপিরা মন্ত্রীদের আর মন্ত্রীরা এমপিদের দোষারোপ করেছেন সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভরাডুবির জন্য। বাস্তবে দুটি রাজনৈতিক জোটই দলকে সংগঠিত করছেন, কর্মী সমাবেশ করছেন এবং নির্বাচনমুখী প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর শঙ্কাপূর্ণ উক্তি, বিরোধী নেতা-নেত্রীদের আক্রমণাত্মক বক্তব্য সৃষ্টি করেছে রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতা ও সমঝোতাহীনতার। রাজনীতিকে সুস্থ ধারায় চালিত করতে হলে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও গণতান্ত্রিক রীতিনীতি মান্য করার সংস্কৃতি গড়ে তোলা আবশ্যক। সংসদে অসংসদীয় ভাষা প্রয়োগ আর পারস্পরিক কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি করে কালক্ষেপণ না করে আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে সাংগঠনিক ও গণতান্ত্রিক ধারা রক্ষায় রাজনৈতিক অঙ্গীকার প্রকাশিত হোক রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্য থেকে। তাহলে গণমনের আশঙ্কা দূর হবে এবং গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত থাকবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচন প্রক্রিয়া একটি অপরিহার্য উপাদান হলেও তা গণতন্ত্রের একমাত্র শর্ত নয়। জনগণের ভোটে বিজয়ী হয়ে সুদীর্ঘ সময় সংসদ বর্জন, জনগণের পক্ষে সঠিক ভূমিকা পালন না করা, গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও সংস্কৃতি পালন না করা গণতন্ত্র অনুশীলনের পথে বড় ধরনের অন্তরায়। যারাই বিজয়ী হোন না কেন গণতান্ত্রিক মন-মানসিকতা ও আচরণ নিয়ে জনগণের প্রয়োজন ও আকাঙ্ক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। হঠাত্ করে তা হবে না। অশুভ শক্তির অসাংবিধানিক তত্পরতার শঙ্কা দূর করে সংবিধান ও গণতান্ত্রিক রীতির পক্ষে সরকারি ও বিরোধী দলের সঠিক ও শক্ত অবস্থানই গণতন্ত্রকে অগ্রসর করতে পারে।
শুধু ক্ষমতামুখী রাজনীতি আর নির্বাচনে যেনতেনভাবে বিজয়ী হওয়ার সুকৌশল দূর করতে হবে। দেশ হতে সর্বাত্মকভাবে দুর্নীতি দূর করতে জাতীয়ভাবে কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। তাতে সরকার ও বিরোধী দলের পারস্পরিক সহযোগিতামূলক তত্পরতা প্রয়োজন। দেশ জনগণের। জনগণের আকাঙ্ক্ষা, নিরাপত্তা, উন্নয়ন ও কল্যাণের স্বার্থেই রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক ধারাকে অব্যাহত রাখা জরুরি। কাজেই আগামী সাধারণ নির্বাচন নিয়ে যে অনিরাপত্তা, সন্ত্রাস ও শঙ্কার ধারণা গড়ে উঠেছে বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে তা দূর করার দায়িত্ব সরকার ও বিরোধী দলের। রাজনীতি হোক দেশোন্নয়ন ও জনকল্যাণের জন্য। ব্যক্তি বা দলের সংকীর্ণ স্বার্থ পেরিয়ে জাতীয় স্বার্থ প্রাধান্য পাক রাজনীতিতে জনগণ তা চায়। নিজেদের রেষারেষি থেকে সৃষ্ট শঙ্কা দূর করতে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকেই অগ্রণী ও সৃজনশীল ভূমিকা রাখতে হবে। যত দ্রুত রাজনৈতিক প্রজ্ঞার ও সদিচ্ছার প্রসার ঘটিয়ে শুভবুদ্ধির উদয় হবে ততই মঙ্গল।
লেখক : প্রাবন্ধিক ও গবেষক
ই মেইল :ratantanukc@yahoo.com
সূত্র ইত্তেফাক, 27.06.13
RbcÖZ¨vkvi ev‡RU : ev¯Íevqb I AvMvgx wbe©vPb
†fv‡ii
KvMR : kwbevi, 15 Ryb 2013
RvZxq msm‡`
2013 mv‡ji cÖ¯ÍvweZ ev‡R‡U RbcÖZ¨vkvi cÖwZdjb N‡U‡Q| AvMvgx wbe©vP‡b weRqx n‡j
ev‡RU ev¯Íevq‡bi gva¨‡g RbcÖZ¨vkv c~iY Zvi jÿ¨| we‡ivax `j Gev‡iv ev‡RU
Dc¯’vcbKv‡j Dcw¯’Z wQj bv| RbM‡Yi me©vwaK `vwe wQj `ªe¨g~j¨ wbqš¿‡Y ivLv| G
cÖZ¨vkv‡K mvg‡b †i‡L cÖ¯ÍvweZ ev‡R‡U AZ¨vek¨Kxq c‡Y¨i Ici ïé ev Ki Av‡ivc Kiv
nqwb| `wÿYv‡ji gvby‡li cÖv‡Yi `vwe cÙv †mZz cÖKí ev¯Íevq‡b D‡jøL‡hvM¨ eivÏ
ivLv n‡q‡Q| cyuywRevRv‡i ÿwZMÖ¯Í wewb‡qvMKvix‡`i ÿwZ †cvlv‡Z Ges cuywRevRvi‡K
w¯’wZkxj Ki‡Z †ekwKQz BwZevPK c`‡ÿc MÖnY Kivmn cÖ‡Yv`bvi cÖ¯Íve ev‡R‡U Kiv
n‡q‡Q| G ev‡RU c~e©v‡cÿv AwaK AMÖmi I MYevÜe| A_©gš¿x G ev‡RU‡K wewb‡qvMevÜeI
e‡j‡Qb| Kv‡jvUvKv mv`v Kivi welq wb‡q c‡ÿ-wec‡ÿ ZK©-weZK© _vK‡jI wbw`©ó cwigvY
Ki w`‡q Kv‡jvUvKv mv`v Kivi my‡hvM †`qv n‡q‡Q| Kv‡jvUvKvi Drm Aek¨B Rvbv‡Z n‡e|
me Kv‡jvUvKvi Drm A‰ea bq| KiduvwK w`‡q hviv UvKv‡K Kv‡jv K‡i Zv‡`i G we‡ePbvq
Avbv n‡e| †`‡ki Dbœq‡bi Ab¨Zg kZ© n‡”Q †hvMv‡hvM Lv‡Zi Dbœqb Kiv| †hvMv‡hvM I
AeKvVv‡gvMZ Lv‡Zi Dbœq‡b we‡kl eivÏ ivLvi cÖ¯Íve Kiv n‡q‡Q| ga¨weË †jvKR‡bi
µqmxgvi K_v we‡ePbvq †i‡L cy‡iv‡bv Mvwoi `vg Kgv‡bv n‡q‡Q| we‡kølK‡`i g‡Z
mewKQz wgwj‡q G ev‡RU mKj †kÖYx I †ckvi gvby‡li cÖZ¨vkv c~iY Ki‡e|
m¤ú‡`i
mxgve×Zv I weivRgvb mgm¨v wbim‡b wecyj m¤ú‡`i Pvwn`vi wecix‡Z ev‡RU cÖYq‡b
we`¨gvb ev¯ÍeZv I mg‡qi `vwe †gUv‡bvi †Póv ev‡R‡U cÖ¯Íve Kiv n‡q‡Q| †m m‡½
m¤¢ve¨ Af¨šÍixY I evwn¨K AwfNvZ †gvKv‡ejv Ki‡Z cvi‡j AvMvgx A_©eQ‡i cÖe„w× 7
`kwgK 2 kZvs‡k DbœxZ Kiv m¤¢e| cÖavbgš¿x †kL nvwmbvi mfvcwZ‡Z¡ RvZxq A_©‰bwZK
cwil‡`i ˆeV‡K 65 nvRvi 870 †KvwU UvKvi evwl©K Dbœqb Kg©m~wP (GwWwc) Aby‡gvw`Z
nq hv PjwZ A_©eQ‡ii GwWwci †P‡q 13 nvRvi 504 †KvwU UvKv †ewk|
cÖ¯ÍvweZ
ev‡R‡U ev‡R‡U Ki nvi bv evwo‡q AvIZv e„w×i gva¨‡g ivR¯^ Avq evov‡bv, M¨vm I
we`y¨r msKU `~i, g~j¨ùxwZ wbqš¿Y, gvbem¤ú` Dbœqb Z_v wk¶v I ¯^v¯’¨ LvZ‡K
me©vwaK ¸iæZ¡ cÖ`vb, Avg`vwb wbf©iZv n«vm, GmGgB LvZ I †`kxq wk‡íi weKvkmn
K…wl‡Z mvi, exR, wW‡Rj I Ilya Lv‡Z fZz©wK cÖ`vb Ae¨vnZ ivLvi cÖ¯Íve Kiv n‡q‡Q|
cvkvcvwk cÙv †mZzi e¨vcv‡i we‡kl †Rvi †`qv n‡q‡Q| GQvov `vwi`ª¨ n«vm, KievÜe,
Drcv`bgyLx, wewb‡qvM mnvqK, Kg©ms¯’vb m„wó, †`kxq wk‡íi ¯^v_©i¶v, Avw_©Kfv‡e
†`k‡K AvZ¥wbf©ikxj Kiv, Askx`vwiZ¡g~jK I MYgyLx ev‡RU cÖYqb Kivi cÖ¯Íve Kiv n‡q‡Q|
Avg`vwb I
ißvwb ïé n«vm, wewb‡qvM Dc‡hvMx cwi‡ek m„wó, M¨vm, we`y¨r, cvwb I AeKvVv‡gvMZ
Lv‡Zi mgm¨vi mgvavb, Ki Av`vq I cÖ`vb c×wZ mnRxKiY Kivi D‡`¨vM MÖnY, Ki AeKvk
myweavi †gqv` 17wU Lv‡Z 2015 mvj ch©šÍ e„w× Kivmn Av‡iv 17wU †fŠZ-AeKvVv‡gv
Lv‡Zi Ki AeKv‡ki †gqv` 2015 mvj ch©šÍ e„w× Kivi cÖ¯Íve Kiv n‡q‡Q| mvgvwRK
wbivcËv †eóbx (weaev, eq¯‹ I gyw³‡hv×v Kj¨vY fvZv) e„w×, ivR¯^ Avq evov‡Z
Ki`vZvi msL¨v e„w×, Ki msµvšÍ AvBwb RwUjZv `~i, Ki Av`vqKvix Kg©KZ©vi Hw”QK
¶gZv n«vm Kivmn miKvwi-†emiKvwi Askx`vwi‡Z¡i (wcwcwc) AvIZvq wewb‡qvM evov‡bvi
cÖ¯Íve Kiv Ges G msµvšÍ AvBb ms‡kvab I bZzb ev‡R‡U wcwcwci AvIZvq eivÏ evov‡bvi
cÖ¯Íve Kiv n‡q‡Q| miKvi miKvwi eÛ gv‡K©U RbwcÖq Kivi j‡ÿ¨ ev‡R‡U cÖ¯Íve Kiv
n‡q‡Q| cvkvcvwk eÛ jvB‡m‡Ýi †gqv` e„w×, wcGmAvB c×wZi †gqv` e„w×i cÖ¯Íve Kivmn
bZzb ev‡R‡U wiKwÛkb Mvwo Avg`vwb wbiærmvwnZ Kivmn Zvgv‡Ki Ici Ki e„w× I wejvm
`ª‡e¨i Ici Avg`vwb ïé evov‡bvi cÖ¯Íve Kiv n‡q‡Q| ev‡R‡U Kigy³ Avqmxgv 2 jvL
UvKv †_‡K evwo‡q 2 jvL 20 nvRvi UvKv Kivi cÖ¯Íve Kiv n‡q‡Q|
ev‡R‡U
AvIqvgx jxM †bZ…Z¡vaxb gnv‡RvU miKv‡ii wbe©vPbx cÖwZkÖæwZmg~n `„k¨gvbiƒ‡c
ev¯Íevq‡bi cÖqvm ¯úó n‡q‡Q| ev‡R‡Ui AvKvi 2 jvL 22 nvRvi 491 †KvwU UvKv, hv
Av‡Mi eQ‡ii Zzjbvq 30 nvRvi 753 UvKv †ewk| eZ©gvb miKv‡ii cÖ_g ev‡R‡Ui Zzjbvq
Gi AvKvi cÖvq wظY| gnv‡RvU †bÎx †kL nvwmbvi wbe©vPbx cÖwZkÖæwZ ev¯Íevqb I
miKv‡ii mvg‡b we`¨gvb bvbvgyLx Pv‡jÄ †gvKv‡ejvi j¶¨‡K mvg‡b †i‡L cÖYxZ n‡q‡Q G
ev‡RU| RbMY‡K A‡bK Avkvi evYx ïwb‡q wbe©vP‡b gnvweRq AR©‡bi gva¨‡g ¶gZvq G‡m‡Q
G miKvi| GRb¨ Zv‡`i Kv‡Q gvby‡li cÖZ¨vkvI A‡bK †ewk| we`¨gvb bvbvwea mgm¨v I
m¤¢vebvi †cÖÿvc‡U †`kevmx Mfxi AvMÖn I cÖZ¨vkv wb‡q A‡c¶v KiwQj G ev‡R‡Ui Rb¨|
†hvMv‡hvM AeKvVv‡gv, K…wl, R¡vjvwb I we`y¨r, wk¶v, Kg©ms¯’vb I mvgvwRK myi¶vi
g‡Zv welq¸‡jv AMÖvwaKvi †c‡q‡Q ev‡R‡U| w`b e`‡ji A½xKvi wb‡q 2008 mv‡ji 29
wW‡m¤^‡ii wbe©vP‡b gnvweRq KivqË K‡i AvIqvgx jxM †bZ…Z¡vaxb gnv‡RvU| RvwZi RbK
e½eÜz †kL gywReyi ingv‡bi ¯^cœ ev¯Íevq‡b 2021 mv‡ji g‡a¨ wWwRUvj evsjv‡`k Movi
j¶¨‡K mvg‡b †i‡L A‡bK cÖwZkÖæwZ †`qv n‡qwQj AvIqvgx jx‡Mi wbe©vPbx Bk‡Znv‡i|
gnv‡RvU †bÎx AvIqvgx jxM mfv‡bÎx †kL nvwmbvI wbe©vPbx cÖPviYvKv‡j Gme cÖwZkÖæwZ
cybe©¨³ K‡ib| Zvi Gme cÖwZkÖæwZi g‡a¨ wQjÑ Pvj, Wvj, †Zjmn wbZ¨cÖ‡qvRbxq
`ªe¨g~j¨ Kwg‡q mvaviY gvby‡li µq¶gZvi g‡a¨ wb‡q Avmv; AvBbk„•Ljv cwiw¯’wZi
DbœwZ; weMZ weGbwc-RvgvZ †RvU miKv‡ii Avg‡j we`y¨r Lv‡Z mxgvnxb Ae‡njv I
jyUcv‡Ui Aemvb NwU‡q we`y¨r mgm¨vi mvgvavb, 2013 mv‡ji g‡a¨ we`y¨r Drcv`b 7
nvRvi †gMvIqv‡U DbœxZ Kiv; 2012 mv‡ji g‡a¨ †`k‡K cybivq Lv‡`¨ ¯^qsm¤ú~Y© Kiv I
gvby‡li Lv`¨ wbivcËv wbwðZ Kiv; `vwi`ª¨ we‡gvP‡b K…wl I MÖvgxY Dbœqb‡K m‡e©v”P
AMÖvwaKvi †`qv; hy×vcivax‡`i wePvi m¤úbœ Ges Rw½ev` I mv¤cÖ`vwqK mš¿vm wbg©~j
Kiv; wk‡ívq‡bi Rb¨ cÖ‡qvRbxq bxwZ MÖnY I wewb‡qvMevÜe cwi‡ek wbwðZ Kiv; 2021
mv‡ji g‡a¨ wWwRUvj evsjv‡`k Movi j‡¶¨ AvBwU wkí Dbœqb I Kw¤úDUvi wk¶v cÖmv‡i
e¨e¯’v MÖnY; mevi Rb¨ wk¶v wbwðZ K‡i 2014 mv‡ji g‡a¨ wbi¶igy³ evsjv‡`k M‡o
†Zvjv; 2013 mv‡ji g‡a¨ mevi Rb¨ ¯^v¯’¨‡mev wbwðZ Kiv; 2015 mv‡ji g‡a¨ mevi Rb¨
Avevmb wbwðZ Kiv; cÙv †mZz wbg©vY, 2013 mv‡ji g‡a¨ moK †bUIqv‡K© MÖvg, BDwbqb,
Dc‡Rjv I †Rjv m`i‡K mshy³ Kivi Kvh©µg m¤úbœ Kiv cÖf…wZ| Gme cÖwZkÖæwZi †cÖ¶vc‡U
bZzb Avkvq eyK †eu‡a RbMYI GK‡PwUqv †fvU w`‡q gnv‡RvU‡K wbe©vwPZ K‡i| RbM‡Yi GB
wecyj cÖZ¨vkv c~iY Kiv gnv‡RvU miKv‡ii mvg‡b cÖavb P¨v‡jÄ|
weMZ Pviev‡ii
g‡Zv Gev‡ii ev‡R‡UI GB P¨v‡jÄ †gvKv‡ejvi cÖqvm i‡q‡Q e‡j Rvwb‡q‡Qb A_©gš¿x
Aveyj gvj Ave`yj gywnZ| G j¶¨ AR©‡b wbe©vP‡bi Avi gvÎ Qq gvm evwK _vK‡Z bZzb
A_©eQ‡ii Rb¨ eo e¨‡qi ev‡RU w`‡jv miKvi| G‡Z ¸iæZ¡ †c‡q‡Q we`y¨r, moK
†hvMv‡hvM, e›`i, †fŠZ AeKvVv‡gv, K…wl, cjøx I gvbem¤ú` Dbœqb Ges mvgvwRK
wbivcËv LvZ| G cÖm‡½ A_©gš¿x e‡j‡Qb, Avgiv Avgv‡`i wbe©vPbx Bk‡Znv‡i †h me
D‡`¨vM †bqvi K_v e‡jwQjvg Zvi A‡bK¸‡jvB B‡Zvg‡a¨ ev¯Íevqb K‡i †d‡jwQ| †h¸‡jv
nqwb Gev‡ii ev‡R‡U †m¸‡jvi K_v ej‡ev| Gev‡ii ev‡RU n‡e ïayB ev¯Íevq‡bi ev‡RU|
miKv‡ii mdj K‚U‡bwZK cÖ‡Póvq Rw½ev`, mš¿vm I `yb©xwZi †`k wn‡m‡e †bwZevPK cwiPq
NywP‡q evsjv‡`k AvšÍR©vwZK A½‡b GKwU AMÖmigvb, MYZvwš¿K I Amv¤úª`vwqK ivóª
wn‡m‡e cÖwZwôZ n‡q‡Q| eZ©gvb ev‡RUwU G †gqv‡` AvIqvgx jxM miKv‡ii †kl ev‡RU|
iƒcKí 2021 †K mvg‡b †i‡L 2009 mv‡j Avgiv †h hvÎv ïiæ K‡iwQjvg, AvR Zvi cÖvq
A‡a©KUv c_ AwZµg K‡iwQ| ïiæ †_‡KB Avgv‡`i jÿ¨ wQj 2021 mv‡ji g‡a¨ †`k‡K GKwU
ga¨g Av‡qi †`‡k cwiYZ Kiv| miKv‡ii †NvwlZ cÖwZwU ev‡RU cÖYxZ n‡q‡Q †mB jÿ¨
c~i‡Yi nvwZqvi wn‡m‡e| wewfbœ mg‡q A‡b‡K gšÍe¨ K‡i‡Qb ev‡RU me mgq D”Pvwfjvlx
n‡q‡Q| wKš‘ ev¯Í‡e Zv cÖgvwYZ nqwb| eis jÿ¨ c~i‡Y miKvi D‡jøL‡hvM¨ mdjZv AR©b
K‡i‡Q| me KwU ¸iæZ¡c~Y© A_©‰bwZK m~P‡K BwZevPK AMÖMwZ n‡q‡Q| RvZxq msm‡`
2013-14 A_©eQ‡ii Rb¨ 2 jvL 22 nvRvi 491 †KvwU UvKvi cÖ¯ÍvweZ ev‡RU †ckKv‡j
ivR‰bwZK w¯’wZkxjZvi cÖwZ †Rvi w`‡q‡Qb A_©gš¿x| ÔDbœq‡bi Pvi eQi : ¯^cœ c~i‡Yi
c‡_ evsjv‡`kÕ wk‡ivbv‡g gnv‡RvU miKv‡ii cÂg Ges †kl GB ev‡RU †ckKv‡j A_©gš¿x
†`‡ki mv¤cÖwZK ivR‰bwZK Aw¯’iZv, we‡kl K‡i RvgvZ I †ndvR‡Z Bmjv‡gi ˆbiv‡R¨i
welqwUI Zz‡j a‡ib| ivR‰bwZK Aw¯’iZvi Kvi‡Y †`‡ki A_©bxwZ evavMÖ¯Í n‡q‡Q D‡jøL
K‡i wZwb GB aŸsmvZ¥K Kg©KvÐ cwinvi K‡i msjv‡ci gva¨‡g mKj ivR‰bwZK mgm¨v
mgvav‡bi AvnŸvb Rvbvb| wZwb e‡jb, weMZ AvovB gv‡m †`‡k GKwU Aw¯’wZkxj ivR‰bwZK
Ae¯’v m„wói cÖqvm P‡j Ges Zv‡Z e¨emv-evwYR¨ h‡_ó Amyweavi gy‡L c‡o| A‡bK
we‡`kxÑ hviv G †`‡k †jb‡`b wbw`©óKi‡Y Av‡mb Zv‡`i åg‡Y evav m„wó nq| eZ©gvb
miKvi eiveiB K…wl LvZ‡K AwaK ¸iæZ¡ w`‡q Avm‡Q| cÖ¯ÍvweZ ev‡R‡U K…wl Lv‡Z eivÏ
†`qv n‡q‡Q 12 nvRvi 275 †KvwU 98 jvL UvKv| hv †gvU ev‡R‡Ui 7 `kwgK 9 kZvsk|
†gvU fZz©wK e¨q aiv n‡q‡Q 9 nvRvi †KvwU UvKv| MZ A_©eQ‡i G Lv‡Z fZz©wK wQj 12
nvRvi †KvwU UvKv| weMZ Pvi eQ‡i G Lv‡Z 23 nvRvi †KvwU UvKv fZz©wK †`qv n‡q‡Q|
cÖ¯ÍvweZ ev‡R‡U G Lv‡Z 14 nvRvi 595 †KvwU UvKv FY eiv‡Ïi cÖ¯Íve Kiv n‡q‡Q|
eZ©gvb
miKv‡ii 5 eQ‡i K…wl Lv‡Z cÖe„w×i aviv Ae¨vnZ i‡q‡Q| miKvi K…wl Lv‡Z Dbœq‡bi Rb¨
†ekwKQy c`‡¶c wb‡q‡Q| Gi g‡a¨ i‡q‡Q K…wl exgv Pvjy, K…wl wecYb `j, K…lK K¬ve
MVb, RvZxq K…wlbxwZ cÖeZ©b Ges D”P djbkxj cv‡Ui RvZ D™¢veb| Gme c`‡¶c K…wl
LvZ‡K Av‡iv kw³kvjx Ki‡Z f‚wgKv ivL‡e e‡jI cÖZ¨vkv e¨³ K‡ib gywnZ| wkÿv‡K
m‡e©v”P ¸iæZ¡ w`‡q‡Q GB miKvi| wbe©vPbx cÖwZkÖæwZ ev¯Íevq‡b weMZ A_©eQi¸‡jvi
g‡Zv Gev‡iv wkÿv Lv‡Z eivÏ †e‡o‡Q| cÖ¯ÍvweZ ev‡R‡U wkÿv I cÖhyw³ Lv‡Z eivÏ aiv
n‡q‡Q †gvU ev‡R‡Ui 11 `kwgK 7 kZvsk| Abybœqb I Dbœqb e¨q wgwj‡q cÖv_wgK I
MYwk¶v gš¿Yvjq Ges wk¶v gš¿Yvj‡qi Rb¨ †gvU eivÏ ivLv n‡q‡Q 25 nvRvi 114 †KvwU
60 jvL UvKv| Gi g‡a¨ cÖv_wgK I MYwk¶v gš¿Yvj‡qi Rb¨ eivÏ 11 nvRvi 935 †KvwU 37
jvL UvKv| wk¶v gš¿Yvj‡qi Rb¨ eivÏ 13 nvRvi 179 †KvwU 23 jvL UvKv| we`y¨r Lv‡Z 9
nvRvi 960 †KvwU Ges R¡vjvwb Lv‡Z 2 nvRvi 291 †KvwU UvKv| Gevi GB Lv‡Z eivÏ
†e‡o‡Q 1 nvRvi 358 †KvwU 20 jvL UvKv| MZ eQi ev‡R‡U we`y¨r Lv‡Z eivÏ wQj 9
nvRvi 993 †KvwU UvKv| Gi g‡a¨ Dbœqb Lv‡Z 9 nvRvi 947 †KvwU UvKv Ges Abybœqb
Lv‡Z 46 †KvwU UvKv| R¡vjvwb Lv‡Z eivÏ ivLv wQj 1 nvRvi 386 †KvwU UvKv| Gi g‡a¨
Dbœqb Lv‡Z 1 nvRvi 386 †KvwU UvKv Ges Abybœqb Lv‡Z 40 †KvwU UvKv| †ij
†hvMv‡hv‡Mi Dbœqb‡K AMÖvwaKvi w`‡q AvMvgx A_©eQ‡ii ev‡R‡U moK I †ijc_ Lv‡Z
Dbœqb I Abybœqb wgwj‡q 5 nvRvi 589 †KvwU UvKv eiv‡Ïi cÖ¯Íve K‡i‡Qb A_©gš¿x|
2021 mv‡ji
g‡a¨ wWwRUvj evsjv‡`k M‡o †Zvjvi †¶‡Î miKv‡ii wbe©vPbx A½xKvi wn‡m‡eB Gme Kiv
n‡q‡Q| bvixi ÿgZvq‡b G miKvi A½xKvive×| G j‡ÿ¨ RvZxq ev‡R‡U bvixi Ask wbwðZ
Ki‡Z Gevi 40wU gš¿Yvj‡q †RÛvi ev‡RU cÖYqb Kiv n‡q‡Q| me wgwj‡q bvixi Rb¨ eivÏ
ivLv n‡q‡Q 61 nvRvi 575 †KvwU UvKv| MZ eQi wQj 54 nvRvi 304 †KvwU UvKv| bvix I
wkï Kj¨v‡Y miKv‡ii wewfbœ c`‡¶‡ci K_v Zz‡j aiv n‡q‡Q| †`‡ki RbmsL¨vi A‡a©‡KiI
†ewk bvix| bvix Dbœqb Qvov †`‡ki mvwe©K Dbœq‡bi Avkv Kiv my`~icivnZ| ZvB miKvi
MV‡bi ci ciB miKvi bvixi ¶gZvqb‡K AMÖvwaKvi G‡RÛv wn‡m‡e MÖnY K‡i‡Q| RvZxq
ev‡R‡U bvixi wnm¨v wbwðZ Kivi j‡¶¨ 2009-10 A_©eQ‡i Avgiv 4wU gš¿Yvj‡qi †RÛvi
ev‡RU cÖYqb n‡qwQj| GiB avivevwnKZv Gevi 40wU gš¿Yvj‡qi †RÛvi ev‡RU Dc¯’vcb Kiv
n‡q‡Q| miKv‡ii wbe©vPbx A½xKvi c~i‡Yi welqwU gv_vq †i‡L cÖ¯ÍvweZ ev‡R‡U mvgvwRK
AeKvVv‡gv LvZ‡K ¸iæZ¡ †`qv n‡q‡Q|
AvMvgx
A_©eQ‡i gvbem¤ú` Lv‡ZI D‡jøL‡hvM¨ eivÏ i‡q‡Q| †`‡ki mKj ¯Í‡ii gvby‡li cÖZ¨vkv I
mgm¨vi cÖwZ ms‡e`bkxj G miKvi RbM‡Yi Kj¨vY I mykvm‡bi welq‡K AMÖvwaKvi wn‡m‡e
MÖnY K‡i‡Q| hvi g~j jÿ¨ `vwi`ª¨ wbimb, Kg©ms¯’vb m„wó, RbM‡Yi Kj¨vY I mylg
Dbœqb wbwðZ Kiv| †`‡ki gvby‡li Lv`¨ wbivcËv I mK‡ji Rb¨ gvbm¤§Z ¯^v¯’¨ wbwðZ
Kivi cÖwZkÖæwZ ev¯Íevq‡b miKv‡ii wbôv I AvšÍwiKZvi cÖwZdjbI N‡U‡Q ev‡R‡U| ev‡RU
ev¯Íevq‡bi eo evav n‡jv ivR‰bwZK Aw¯’wZkxjZv| cÖ¯ÍvweZ ev‡R‡U ev¯Íevqb n‡j Pvi
eQi ci †`‡k we`y¨r mgm¨vi cwic~Y© mgvavb n‡e| †eKvi mgm¨vI A‡bKUv `~i n‡e|
A_©‰bwZK MwZkxjZv evo‡e DbœZ †`k¸‡jvi g‡Zv| GRb¨ †`kxq Ackw³ †gvKv‡ejv K‡i
†`‡ki Pjgvb mgm¨v wb‡R‡`i mgvavb Kivi civgk© w`‡q‡Qb we‡klÁiv| evB‡ii kw³ w`‡q
we`¨vgvb ivR‰bwZK mgm¨vi mgvavb Kiv hv‡e bv| we`¨gvb ivR‰bwZK e¨e¯’vi mgm¨v
mgvav‡b ivRbxwZ‡K †X‡j mvRv‡bvi civgk© w`‡q‡Qb we‡klÁiv| ¶gZv GK RvqMvq bv †i‡L
¯Í‡i ¯Í‡i web¨vm Ki‡Z n‡e| A_©vr ÿgZvi we‡K›`ªxKiY cÖ‡qvRb †mB j‡ÿ¨ ¯’vbxq
miKvi kw³kvjx Kiv mg‡qi `vwe| ivR‰bwZK `‡ji g‡a¨ MYZš¿ PP©vi e¨e¯’v Ki‡Z n‡e|
†`‡ki bvMwiKiv myôzfv‡e †fvU †`qvi AwaKvi †c‡j mwVK wm×všÍ †b‡eb AvMvgx
wbe©vP‡b †`‡ki g‡a¨ M„nhy‡×i †NvlYv †`qvi ciI RvgvZ‡K wbwl× bv Kivq miKv‡ii
K‡Vvi mgv‡jvPbv K‡i‡Q cÖMwZkxj ivR‰bwZK I mvgvwRK kw³| `yb©xwZ RvwZi kÎæ| G
kÎæ‡K `g‡bi Rb¨ `jgZ wbwe©‡k‡l RvZxq g‰ZK¨ MVb Ki‡Z n‡e| B‡Zvg‡a¨ `y`K‡K Av‡Mi
†P‡q A‡bK kw³kvjx, Kvh©Ki I ¯^vaxb Kiv n‡q‡Q| †WmwUwb, njgvK©, †kqvievR‡ii A_©
jyUcvUmn `yb©xwZi bvbv NUbv B‡Zvg‡a¨ eûj cÖPvwiZ n‡q‡Q| G ch©šÍ wZbevi †`k e`j
Kiv n‡q‡Q, miKvi e`j n‡q‡Q AmsL¨evi| wKš‘ gvby‡li Kvw•ÿZ ¯^‡`k M‡o I‡Vwb| †`k `yb©xwZ
I mš¿vm †_‡K gy³ nqwb| RbM‡Yi fv‡M¨i wKQzUv e`j n‡jI GL‡bv ivRbxwZ Avk¼vgy³
nqwb| MYZvwš¿K ivRbxwZi cwie‡Z© `jxq I e¨w³‡Kw›`ªK ivRbxwZi aviv Pvjy i‡q‡Q|
we‡ivax `‡ji Amn‡hvwMZvi Kvi‡Y msm`xq MYZš¿ AKvh©Ki nIqvi Acµg n‡jI Zv‡Z †invq
†c‡q‡Q †`k| GKUvbv wZivwk w`b ci weGbwc msm‡` G‡jI nVvr msm` eR©‡bi cy‡iv‡bv
Af¨v‡m P‡j hvq| ev‡RU Awa‡ek‡bi g‡Zv ¸iæZ¡c~Y© cwiw¯’wZ‡Z Zv‡`i f‚wgKv n‡q D‡V
`vwqZ¡nxb| msm‡` Av‡jvwPZ nq eû gvgjvi cÖevmx Avmvwg‡K wb‡q| Gikv‡`i cZ‡bi ci
†_‡KB we‡ivax `j msm` eR©b K‡i Avm‡Q| G aviv †_‡K RvwZ‡K gy³ Ki‡Z n‡e| AvMvgx
wbe©vPb myôzfv‡e Kivi Rb¨ wbe©vPb Kwgkb‡K Av‡iv kw³kvjx I Kvh©Ki Kivi c`‡ÿc
wb‡Z n‡e| Zvn‡jB miKv‡ii ev‡RU RbcÖZ¨vkv c~i‡Y AMÖmi n‡Z cvi‡e|
iZbZby †Nvl :
cÖvewÜK I M‡elK
ratantanukc@yahoo.com