পৃষ্ঠাসমূহ

কবিতার পরিচয়

কবিতার উৎস আছে এখানে সেখানে সবখানে; কবিতার অস্তিত্ব কবিতার বাইরে কিংবা ভেতরে নয়। মচমচে কবিতা চাইলে প্রকৃতিলগ্ন হয়ে বৃক্ষের শরীর বন্দনা কর; তার ইতিহাস নাও; বেঁচে থাকার কিংবা রূপান্তরের ইতিকথা লিখো। বারুদভরা বিস্ফোরক কবিতা পেতে হলে বঞ্চিতের হাহাকার ধ্বনিত করো, বৈষম্যের পাহাড় উদ্ঘাটন করো। নিরন্নদের দ্রোহ কিংবা অগ্নিদগ্ধের আহাজারি ফুটিয়ে তোলো। শীর্ষ কবিতার স্বাদ নিতে হলে মানুষের মর্মবাণী ধারণ করো; অনুভূতির শিরা-উপশিরায় জাগ্রত করো সৃষ্টির উৎকর্ষ ও প্রাচুর্য; বিপন্নদের আর্তনাদকে ভাষা দাও; দলিতের বেদনা রঞ্জিত করো চেতনার বহুরঙা অনুভূতি শব্দের পরিসরে সাজাও। প্রেমের কবিতার ঘ্রাণ নিতে হলে চিত্রময় প্রকৃতি, রূপসী নারী; কিংবা শিশুর সারল্যে নিজেকে মগ্ন করো, মুগ্ধ করো; নিজেকে গভীর করো, অতলের অস্তিত্ব অনুভব করো বাসনার শূন্য ভা পূর্ণ করো ভাবের ব্যঞ্জনায়; স্নিগ্ধ-সতেজ কবিতা চাইলে মানুষের কান্না দ্রবণ করো শব্দে; হাসির প্রশান্ত গভীরতা বিকিরণ করো নিরবে; নিজের নির্জনে গিয়ে ধারণ করো স্রষ্টা ও সৃষ্টির মহিমা; বিস্ময়ের বর্ণিলতা ভেদ করে রহস্য তুলে ধরো আত্মদ্রাঘিমায়; উপলব্ধির আলোকোজ্জ্বল ধরণীকে ধারণ করো তোমার ক্যানভাসে। পশুপাখি ও জীবপ্রজাতির নানা অনুষঙ্গ উচ্চকিত করো চেতনার ঐশ্বর্যে বিশ্বপ্রকৃতি কবিতার ঘর; মানবপ্রকৃতিসহ কেউ নয় কবিতার পর কবিতার শস্যরাশি কবিভাষ্যে হোক শব্দায়ন।
নাটমণ্ডল সংলগ্ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ০২.০৭.২০১৪

বিপন্ন মানবতা

হরতালমগ্ন বিরোধী দল যখন সহিংসতায় এগিয়ে; জনগণ তখন আতঙ্কিত; রাজনীতিতে বিমুখ কিংবা পিছিয়ে। রাজনীতি কী দারুণ ব্যবসা জনজীবন নিয়ে; হরতালের সাফল্য কিংবা পূর্ণতা নিয়ে দায় সারে ধন্যবাদ দিয়ে। রাজনীতির নামে আজনীতি আর মুখরোচক বুলি; জনগণ তা খায় না; চায় না মানুষ মারতে গুলি। ভোটের জন্য নির্বাচন আর নির্বাচিত হয়ে সংসদ ছেড়ে বাইরে; এ কী গণতন্ত্র! গণকল্যাণের নামে কর্মসূচি, তবু জনগণ নাইরে। দেশ রক্ষার নামে আগুন জ্বেলে চলে মানুষ মারার রাজনীতি জনগণের টাকায় বেতন নিয়ে জনগণকে দেখায় ভয়ভীতি এ তো মানুষখেকোর দল, আনন্দে করে সহিংসতা; পাশবিকতা যত বাড়ে বিপন্ন হয় তত মানবতা। সহিংসতা আর উস্কানি সমস্যার সমাধান নয় গণতান্ত্রিক হও; জাতীয় ইস্যুতে মতৈক্য নিয়ে জনচিত্ত করো জয়।
শিক্ষকপল্লি, মোহাম্মদপুর, ঢাকা; ০১.০৭.২০১৪

দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ গড়ি

একই সমাজে আছে জেলে তাঁতি বস্তিবাসী কুমার কামার কৃষক শ্রমিক কুলি মজুর রিকশাচালক ধোপা নাপিত চামার। সমাজে নেই সম্মান তাদের, সভ্যতা গড়ার পরিশ্রম যাদের; দারিদ্র্য আর বঞ্চনা নিত্যসঙ্গী লাঞ্ছনা; সচ্ছলতা আসবে কবে তাদের। সবাই বলেন : তারাও মানুষ; খেটে খাওয়া সত্তা নিয়ে অতিব্যস্ত; রোদ বৃষ্টি ঝড়ে বন্যা খরায় মরে; তারা বিপদে সর্বাগ্রে ক্ষতিগ্রস্ত। সৌভাগ্য তাদের আসবে না; সুখস্পর্শও পাবে না; দৌরাত্ম্য যখন দরিদ্রতার উপেক্ষা, অসহায়ত্ব-হতাশা নিয়ে ভরসা নেই সুস্বাস্থ্যের কিংবা নিরাপত্তার। চলো বেকারমুক্ত সাম্যসমাজ গড়ি; পিছিয়ে পড়াদের অগ্রসর করি; সকলে মতৈক্য করি; সবার সহযোগিতায় কল্যাণরাষ্ট্র গড়ি। ভিক্ষা ছেড়ে কাজে এসো; স্বনির্ভর ও সুস্থ সমাজ গড়ো; সবাই তাকাও সবার দিকে; সহযোগিতার হাত ধরো।
শিক্ষকপল্লি, মোহাম্মদপুর, ঢাকা; ০১.০৭.২০১৪

ছবিময় স্বদেশ

বিগত দিনগুলোতে ফিরে যাই স্বপ্নের পথ ধরে রুগ্ণ বাস্তবের হতাশায় খুঁজি ঐতিহ্যের রূপরেখা; নারীর পণ্যময়তা আর পণ্যের নারীময়তা ভীষণ বাণিজ্য; সলজ্জ নারীর নির্লজ্জ ছবিরূপ বাংলার নারীঐতিহ্য নয়। ঐতিহ্যের আছে চিত্ররূপ, আছে চিত্রবাস্তবতার ঐতিহ্যিক রূপ; চিত্ররূপময় বাস্তবের মানুষ খোঁজে আত্মপ্রতিচিত্র। কবির চোখে বাস্তবের সবই চিত্রময় অথবা চিত্ররূপের বাস্তবতা; স্বদেশের মাতৃরূপ আমার চিত্তভূমি, পবিত্রতার ছায়াচিত্র। স্বদেশের পবিত্র ভূমিতে কোথায় চরণ রাখি! অথচ মাতৃভূমিতেই প্রতিদিন পড়ে লাশ, রক্তের কলঙ্ক দাগ; দেশপ্রেমীগণ স্বদেশের রুগ্ণ ছবিতে বিমর্ষ ও বিধ্বস্ত। সহিংসতায় বীরত্ব নেই, মানুষ খুনে পুণ্য নেই; খুনোখুনি, জ্বালাও-পোড়াও স্বদেশের ছবি নয় কিংবা ছবিময় স্বদেশ নয়, তা জনমনের আতঙ্ক ও ভয়।
ছবিরহাট, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা; ০১.০৭.২০১৪

বাস্তবের ছবিময়তা

ছবিরহাটে এসে কবিতাসম্ভবা আমি সবকিছুকে ভাবি ছবি; পাশের প্রকৃতিকে মনে হয় নারীত্বময়, নারীকে মনে হয় প্রাকৃতিক কবিতা। ছবিতে আপন রূপ দেখে বিস্মিত আমি; ছবি আমাতে নাকি আমি ছবিতে! নারীর ছবিময়তা আর ছবির নারীময়তা মেনেই চিত্রকলা। বাস্তবের মানুষ ফেলে খুঁজি আমরা ছবিময় সুসজ্জিত মানুষ; তাতে না পাই প্রকৃত মানুষ; না পাই মানুষের রূপরেখা। বাস্তব ও চিত্রময় মানুষ দ্বিরেখা থেকে বহুরৈখিক সত্তায় অঙ্কিত; নতুন মাত্রায় নিজেকে দেখি আমি ছবিবাস্তবতা বাস্তবের ছবিজুড়ে কল্পিত সত্তামগ্ন হই। দেশপ্রেমিক মানুষ ও স্বদেশের ছবি দেখে আত্মহারা। সহিংসতা-ধ্বংসময়তায় থাকে না স্বদেশের ছবি কিংবা ছবিময় প্রকৃত স্বদেশ; মানবদ্রোহীদের চেতনায় পাই না মানুষের ছবি কিংবা ছবিময় মানুষ।
ছবিরহাট, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা; ০১.০৭.২০১৪

প্রকৃতিদ্রোহ

প্রকৃতির কাছে এলাম সহসা জরুরি আকর্ষণে; চেনা নদী অচেনা হলো বহু বছর পর, শহরজুড়ে বাড়ি গাড়ি তার উপর। তাকিয়ে দেখি নদীটি নেই; আছে নদীর লাশ। প্রশস্ত নদী চিলতে ছিলো; শীর্ণ নদী মরে গেলো। নদীর উপর সড়ক, সড়কের উপর গাড়ি চলাচল। মানুষের চোখে বিম্বিত হয় খুনের হলাহল। নদীখেকোদের বহুতল বাড়ি যানজট কোলাহল; মানুষের বিরুদ্ধে মানুষ দেখি; প্রকৃতির বিরুদ্ধেও মানুষ এ কী! নদীর উপর বিষাদবিন্দু দাঁড়িয়ে, কাঁদে ফুল ও পাখি আশ্রয় হারিয়ে। এ কী উন্নয়ন? নাকি অনুন্নয়ন! শান্তি মঞ্জিল, হাতিরপুল, ঢাকা; ২৮ জুন, ২০১৪

প্রকৃতি ও মানবপ্রকৃতি

এতটা ভীতি কিংবা আতঙ্ক নিয়ে চলে না জীবন; নদী পাহাড় বৃক্ষ সমুদ্র বন প্রকৃতির মূলধন। সব জলাভূমি সবার; দখলবাজ কিংবা দূষণকারীর নয়। পাহাড়চূড়ার সৌন্দর্য আর বিশুদ্ধ বাতাসের অধিকার সবার; উন্নয়নের নামে বনভূমি হত্যা কিংবা বৃক্ষকর্তন নয়; প্রকৃতির বিরুদ্ধে যাওয়ার পরিকল্পিত আয়োজনে মানুষের যত ভয়। ফুলের সৌরভ নিতে বাগানে এসো; বিশুদ্ধ বাতাস নিতে নদী কিংবা সমুদ্রতীরে চলো; প্রকৃতির শান্ত সবুজ সৌন্দর্য দেখতে আর নিবিড় মিতালি গড়তে এসো বনভূমির কাছে একান্তে। মানুষেরা প্রকৃতির অংশবিশেষ; প্রকৃতি করো না নিঃশেষ। প্রকৃতিময় বন্ধুত্বের জীবন মানুষের প্রয়োজন; মানবপ্রকৃতি প্রকৃতির বাইরে নয়; প্রকৃতিদ্রোহীর জয় ভয়াবহ হয়। প্রকৃতি-পরিবেশ ধ্বংস নয়, মানবিক পরিবেশেই মানুষের জয়। 
রমনা পার্ক, ঢাকা; ০৮ জুন, ২০১৪

দ্বিমেরু অবস্থান

একবার ঘৃণার তুফান এলে ভালোবাসা আর হয় না সহজে; মানুষ মাত্রই ঘৃণা আর ভালোবাসার দ্বিমেরু সহাবস্থানে। কাকে ভালোবাসা যায় আর কাকে নয় তা সবার ব্যক্তিগত; মানুষ হয়ে মানুষের বিরুদ্ধে, শান্তির বিরুদ্ধে যাওয়া প্রিয়জন হয়ে প্রিয়জনের বিরুদ্ধে যাওয়া এ বড় দুঃসহ। মানুষ ভালোবাসার ঊর্ধ্বে কিংবা ঘৃণার অতলে নয়; মানুষ মানে একটি সচল অবয়ব কিংবা ধরাবাঁধা কিছু নয়; মানুষ মুখস্থ সত্তা নয়, বেশ গভীরতাময়। মনের এপার হতে ওপারে মানুষের যাওয়া-আসা; শূন্যতায় ফুল ফোটানোর যাদুকরী ক্ষমতা তার। তবু কেন আত্মবিনাশী আয়োজনে সযতœ পরিচর্যা তার; স্বার্থের বলি হয়ে নিজেকে নিঃশেষ করার প্রবণতা বোঝা ভার। মানুষ না থাকে নিজের ভেতরে, না থাকে তার বাইরে; তার আছে সর্ববিস্তারী ক্ষমতা, বিকাশের সৃষ্টিময়তা। প্রাণপ্রাচুর্য নিয়ে সে যখন সচেষ্ট ও উচ্চকিত থাকে অবিরত দেবত্ব অর্জিত হয় তার, আর পশুত্ব মানে বশ; নিজেকে ক্ষত-বিক্ষত করার প্রয়াস তবু কেন কমে না বিশ্বে মৃত্যুঞ্জয়ী সত্তা নিয়ে কেন তবু জর্জরিত ভয়াবহ তীব্র বিষে! দৈনিক ইত্তেফাক ভবন, ঢাকা; ১১ জুন, ২০১৪

জীবনের পরিসর

নিজে দেখতে পারো কিংবা অন্যকে দেখাতে পারো ফুল, পাখি, নদী ও নারী অথবা প্রকৃতির বিস্ময়; জীবনের প্রতি ভালোবাসা হতে প্রকৃতিপ্রেম সবই। দেখার কিংবা দেখানোর ক্ষমতা নিয়েও যারা অন্ধ থাকে, সচেতনভাবে উপেক্ষা করে নিজেকে তারা কি আত্মান্ধ? তারা কি জীবনপ্রেমী না প্রকৃতিপ্রেমিক! যে যাই বলে বলুক, আত্মচেতনার স্পর্শময় অনুভূতি উপেক্ষা করো না জীবনের উর্বর ভূমিতে থেকে নিজেকে নিষ্ফলা রেখো না, ভূমিকাহীন থেকো না জীবনের বহুত্বময় মাঠে চাষ করো সুন্দর, প্রেম, স্বপ্ন, আশা ও অন্বেষা। তাৎপর্যের পরিসরে আদিগন্ত ছুটে যেতে হবে নতুন নির্মাণে; বহুফসলা জীবন সক্রিয় চাষির হাতে থাকে সবুজ ও সতেজ; দুর্ভার পাথরবাহীরা মরুময় জীবনের ক্লান্ত পথিক, তারা বিশ্রামের অপেক্ষায়। জীবনের রহস্যময় জ্যামিতি এঁকে নিজেকে প্রকাশ করেন জীবনশিল্পী; এ মহা সামর্থ্যরে অর্জন প্রচেষ্টার অধীন। জীবনের শূন্য পরিসর পূর্ণ করা, অর্থহীনতাকে তাৎপর্যময় করা জীবনশিল্পীর কাজ। সবাই শিল্পী নয়; শিল্পের উপকরণ থাকে সবার সত্তায়। প্রীতিময় জীবনের প্রতি পর্ব তাৎপর্যময়; সানন্দে পথ চলেন জীবনবাদী নিত্যজয়ের নেশায়। শিল্পকলা একাডেমি, ঢাকা; ১০ জুন, ২০১৪

গণদুষমন

দানব হলে মানবশাসক দূর হবে না দুঃশাসন বাড়বে শোষণ-নির্যাতন; বিপন্ন হবে মানুষের মর্যাদার আসন। রাজনীতি নগদনীতি, মানুষ মেরে সহিংসতায় প্রীতি; অরাজক পরিস্থিতি হত্যা খুন আর গুমে মানুষের যত ভীতি। গণদুষমনদের আশ্বাসে বিশ্বাস নেই, ভরসা নেই অঙ্গীকারে; তারা কখনো ভাষণে ভীষণ, কখনো গ্রেফতার হয়ে কারাগারে। কিছু বামের আছে দুর্নাম; বিএনপি ওরফে জামায়াতের নেই সুনাম; দল বদলকারী সন্ত্রাসী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেরও বদনাম।
হাতিরপুল বাজার, ঢাকা; ১১ জুন, ২০১৪

স্বার্থপর

তুমি ছিলে প্রিয়জন শুভাকাক্সক্ষী বন্ধু অনেকের প্রিয় কথা শোনাতে, অপ্রিয় কাজ এড়াতে। অন্যের পছন্দ আর আগ্রহের বিষয় জানতে; ভালোবেসে অন্যের শূন্যতা পূরণ করতে। এখন নিজে ভালো থাকতে চাও; ভালো খেতে-পরতে চাও; ভালো করতে চাও না অন্যের; ভালো হতে চাও না নিজে। অন্যকে বঞ্চিত করে পেতে চাও নিজের সমৃদ্ধি; অন্যের ক্ষতির বিনিময়েও আত্মস্বার্থ লাভে তৎপর হও। ক্রমাগত কর্মদোষে অপ্রিয় হয়েছ সবার; অথচ ছলচাতুরি ছাড়াই ভালো হতে পারতে, ভালো করতে পারতে অন্যের, এমনকি নিজেরও। নিজের ত্র“টি আড়াল করে অন্যের দোষ খোঁজো নিরন্তর; অন্যের যা অপছন্দ তা কর সানন্দে সারাক্ষণ। পরনিন্দা কর অবিরত; অন্যের অকল্যাণ কর প্রতিনিয়ত নিজের দোষ লালন করে অন্যকে ঢেকে ফেলো বদনামে। ভালো হয়ে থাকতে চাও না সুখে ও সুনামে। নিজেকে অন্যের মধ্যে, অন্যকে নিজের মধ্যে দেখতে চাও না; কারো দুঃখে-শোকে, দুঃসময়ে সহায়ক হতে পারো না। অন্যের অনুগ্রহ পেয়েও অন্যকে জ্বালাও নিয়মিত; চাইলে নিজে ভালো থেকে অন্যেরও ভালো করতে পারো ক্রমাগত। শিক্ষকপল্লি, মোহাম্মদপুর, ঢাকা; ১২ জুন, ২০১৪